Monday, February 23, 2009

Euro Barta, February 2009




মহাজোটের বিস্ময়কর বিজয় ইউরোবার্তা রিপোর্ট ঃ
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ নেতৃত্বধীন মহাজোট অবাক করা বিজয় অর্জন করেছে। ২৯৯ আসনের মধ্যে তারা ২৬২ আসন পেয়েছে। ২৯ ডিসেম্বর সকল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ চলে। সারাদেশে মোট ভোটার ৮ কোটি ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৬৯৮ জন। ভোটারের মধ্যে প্রায় ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ ভোটার এবার ভোট দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ বলেছে, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ট হয়েছে। তবে বি এন পি ৭২ টি আসনের ২২০টি ভোট কেন্দ্রে কারচুপিও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে। স্বয়ং আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী মন্তব্য করে বলেন, আমরা ভাবতেও পারিনি এত আসন পাব। তবে হাইকমান্ড থেকে বলা হয়েছে বিজয়ের জন্য সকল প্রকার প্রস্তুতি নিতে। ভাবছিলাম আগের তুলনায় আমাদের আসন বাড়বে। কিন্তু সরকার গঠণ করতে পারবো এমন আশা করেনি।

প্রেস ব্রিফিং-এ খালেদা জিয়া ঃ নির্বাচনের ফলাফল গ্রহণযোগ্য নয় ইউরোবার্তা ডেস্ক ঃ
বি এন পির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল গ্রহণযোগ্য নয় বলে বলেছেন, সাজানো নির্বাচনে পূর্ব নির্ধারিত ফলাফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন প্রমাণ করেছে, এই নির্বাচনের কোন গ্রহণ যোগ্যতা নেই, তিনি বলেন, যে নীল নকশার কথা আমরা অনেক আগে থেকেই বলে আসছিলাম এই নির্বাচনের ফলাফলে সে নীল নকশাহ্ বাস্তবায়ন বাস্তবে দেখা গেল। বি এন পির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বেগম খালেদা জিয়া একথা বলেন। এ সময় দলের মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেন স্থায়ী কমিটির সদস্য এম সাইফুর রহমান, আর এ গণি, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, এডভোকেট মাহবুব উদ্দিন আহম্মেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বেগম জিয়া বলেন, পরাজিত নেতাদের তালিকায় এমন নেতৃবৃন্ধ রয়েছেন যারা বারবার বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসছিলেন। একটি বিষয় লণীয় যে, দুপুর বারোটার মধ্যে ৪৫ থেকে ৫০ শতাংশ ভোট পড়ে তারপর বেশীর ভাগ ভোট কেন্দ্রগুলো ভোটার শূন্য ছিল। কিন্তু গণনায় দেখা যায় যে, বহুভোট কেন্দ্রে প্রায় নব্বই শতাংশ ভোট গ্রহণ করা হয়। ভোট মহাজালিয়াতির এমন দৃষ্টান্ত অতীতে নেই। তিনি বলেন, আমি সর্ব প্রথমেই চীফ ইলেকশন কমিশনারকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ, তিনি একটি সাজানো ইলেকশন বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করেছেন এবং তার এ নীল নকশা বাস্তবায়নে এ দেশে পুনরায় নব্য বাকশাল কায়েমের পথ উন্মোক্ত করেছেন। আমি দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, গণতন্ত্রে উত্তরণের জন্য আমাদের পূর্ণ প্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও এবারের সাজানো নির্বাচনে পূর্ব নির্ধারিত ফলাফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন প্রমাণ করেছে এই নির্বাচনের কোন গ্রহণযোগ্যতা নেই। তাই নির্বাচনের ফলাফল জনগনের মতামতের প্রতিফলন নয়। এমতাবস্থায় এই প্রহসনের নির্বাচন বি এন পির কাছে গ্রহণযোগ্যতা নয়।

জয়ের বক্তব্য দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের নীলনকশা, বাস্তবায়ন হতে চলছে কি?
নিউইয়র্ক থেকে মোবায়েদুর রহমান ঃ আগামী ২৯ শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বা তাদের জোট যদি মতায় যায় তাহলে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী, শিা ব্যবস্থা, মহিলাদের পোশাক-পরিচ্ছদ, পরিবারের স্বাধীনতা, মাদরাসা, হাসপাতাল এবং আলেম সমাজের ওপর ভয়াবহ হস্তপে ঘটবে। এই তথ্য রাজনৈতিক পর্যবেক বা রাজনৈতিক সমীকদের মস্তিষ্ক প্রসূত কষ্ট কল্পনা নয়। এই তথ্য দিয়েছেন জনাব সজীব ওয়াজেদ জয়। আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার পুত্র হিসাবে তিনি এই তথ্য দেননি। এই তথ্য দেয়ার সময় নিজেকে তিনি দাবী করেছেন শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্ঠা হিসাবে। আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা উন্মোচনের সময় সজীব ওয়াজেদ আরেকটি চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে, বাংলাদেশের বর্তমান মিলিটারী সরকারের সাথে আওয়ামী লীগের অনেকগুলো আলোচনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, সজীব ওয়াজেদ নিজেই বর্তমান সরকারকে সামরিক সরকার বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি এও দাবী করেছেন যে, গণতন্ত্র পুণঃ প্রতিষ্ঠার জন্য বর্তমান মিলিটারী সরকারের সাথে আওয়ামী লীগের যে কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে সেই সব আলোচনাসহ আরো কয়েক দফা আলোচনা বৈঠকে তিনি আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রধান আলোচকের ভূমিকা পালন করেন। এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য জানা গেছে খোদ সজীব ওয়াজেদ লিখিত একটি নিবন্ধ থেকে। একজন প্রাক্তন মার্কিন সামরিক অফিসারের সাথে যৌথভাবে লিখিত এই নিবন্ধটির শিরোনাম বাংলাদেশে ধর্মীয় উগ্রবাদ প্রতিরোধ। হার্ভার্ড ইন্টারন্যাশনাল রিভিউ নামক সাময়িকীর বিগত ১৯ নভেম্বর সংখ্যায় নিবন্ধটি লিখিত হয় এবং ব্যাপক প্রচারের জন্য ওয়েব সাইটে দেয়া হয়। বলা হয়েছে যে, জয় হার্ভার্ডের কেনডী স্কুল অফ গর্ভমেন্ট থেকে লোক প্রশাসনে মাষ্টার্স করেছেন। তার সহ লেখকের নাম কার্ল জেসিও ভাস্কো। এই ভদ্রলোকও একই স্কুল থেকে গ্রাজুয়েশন করেছেন। ইরাক এবং সৌদি আরবে একজন আর্মি অফিসার হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। নিবন্ধের শুরুতেই জয় এবং কাল একটি অদ্ভূত থিওরী দিয়েছেন। তাদের মতে ধর্ম নিরপেতা হলো একটি পবিত্র মতবাদ। ধর্ম নিরপেতার পবিত্রতা নাকি নষ্ট করেছে এক প্রসারমান ইসলাম। তাদের জ্ঞানের বহর দেখে হতবাক হয়ে হয়। যে দেশের সংবিধানে ইসলাম এখনো রাষ্ট্রধর্ম সেই থেকে ইসলামই নাকি সংবিধান এবং ধর্মনিরপেতার ভিত্তির প্রতি বিরাট হুমকি। শেখ হাসিনার উপদেষ্ঠা বলে দাবিদার নিজেই বলেছেন যে, যদি আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জয়লাভ করে তাহলে বাংলাদেশে ইসলামী পুনরুত্থানের জোয়ারকে তারা প্রতিহত করবেন। জয়ের বক্তব্য ষয়যন্ত্রমূলক সার্বভৌমত্বের বিরুধী ঃ ইরাক হামলায় অংশগ্রহণকারী সাম্রজ্যবাদী শক্তির অফিসারের সাথে মিলে সজীব ওয়াজেদ যে সব বক্তব্য রেখেছেন সেগুলো এক কথায় ভয়ঙ্কর। এগুলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বিপদজনক। তিনি যা বলেছেন সেটি যদি আসলেই আওয়ামী লীগের বক্তব্য হয় তাহলে সেই বক্তব্যে ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে জয়ী করতে গন্ধ পাওয়া যায়। সজীব ওয়াজেদ দিনকে রাত এবং রাতকে দিন করেছেন। তা নাহলে কিভাবে বলেছেন যে, বর্তমান সামরিক সরকারের দুই বছরে সরকারের উৎসাহেই ধর্মীয় উগ্রবাদের বিস্তার লাভ করেছে। বাংলাদেশের একজন সাধারণ মানুষও জেনে গেছেন যে ভারতমার্কিন ষড়যন্ত্র এবং তাদের দোসর আওয়ামী লীগের সম্মিলিত তৎপরতার ফসল হচ্ছে ওয়ান ইলেভেন। ওয়ান ইলেভেনের নায়কদের পৃষ্ঠপোষকতার ফলেই আওয়ামী লীগ মোটামোটি অত রয়েছিল এবং হাসিনার তৈয়ারী করা ফখর উদ্দিনের সামরিক ঘেষা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সকল কাজের বৈধতা দিবে বলেই প্রশাসনের সহায়তায়। ২৯ ডিসেম্বর একটি সাজানো চকের নির্বাচনে ইঞ্জিনিয়ারিং প্রক্রিয়ায় কারচুপি করে চারদলীয় জোটকে হারিয়ে আওয়ামী লীগকে মতায় বসানো হয়। ওয়ান ইলেভেনের প্রথম দিন থেকেই নেপথ্য শক্তি নির্মূল করতে চেয়েছে ঐক্যজোট শক্তি সমূহকে। হাসিনা তনয় জয় জামায়েত সংগঠনকে মৌলবাদী বলে গালাগালি করেই ান্ত হয়নি। তিনি একটি অবিশ্বাস্য ও একটি উদ্ভট উক্তিও করেছেন। বলেছেন যে, ধর্মীয় শক্তি সমূহ নাকি বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে পুনরায় একটি রাষ্ট্রে পরিণত করার প্রচেষ্টাকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেছে যে, ২০০৫ সালে যারা দেশে একদিনে একই সময় যে ৫শ’ বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছিল তার সাথে নাকি ঐক্যজোটের প্রত্য এবং পরো যোগাযোগ রয়েছে। এসব ব্যাপারে স্পষ্ট কথা বলা দরকার। ঐক্যজোটসহ বাংলাদেশে অন্যান্য ধর্মীয় দলগুলোর একজন সদস্যও নেই যিনি বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে পুনরায় একটি রাষ্ট্রে পরিণত করার স্বপ্ন দেখেন। ২০০৫ সালের সিরিজ বোমা বিস্ফোরণের সাথে ধর্মীয় দলকে জড়িত করার জন্য অতীতে অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। যে ৭জনকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে তাদেরকে ও নানানভাবে জেরা করা হয়েছে। কিন্তু তাদের সাথে জামায়াতের দুরতম সম্পর্কও আবিস্কৃত হয়নি। বিচার প্রক্রিয়ায় যে বিষয়টি বিন্দুমাত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি সেই একই বিষয় তারা প্রোপাগান্ডার জোরে প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে। তবে এসব কথা বলে লাভ নেই। কারণ যুক্তি তর্ক নয়, গালাবাজির জোরে অন্যকে পরাস্ত করাই আওয়ামী রাজনীতির মৌলিক বৈশিষ্ট্য।
সেনাবাহিনী নিয়ে ভয়ংকর বক্তব্য ঃ সেনাবাহিনী নিয়ে সজিব ওয়াজেদ জয় ভয়ঙ্কর খেলায় মেতেছিল। সেনাবাহিনীর রিক্রটমেন্ট বা অভ্যন্তরীণ প্রশাসন সম্পর্কে বিগত ৩৮বছরে কেউ কোন কথা বলেনি। কিন্তু শেষ হাসিনার উপদেষ্টা বলে দাবীদার সজীব ওয়াজেদ জয় সেখানে এক ভয়াবহ তথ্য উৎপাদন করেছেন। তিনি বলেছেন যে, ২০০১ সাল পর্যন্ত সেনাবাহিনীতে যে রিক্রটমেন্ট হয়েছে তার মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশ এসেছেন মাদ্রাসা থেকে। কিন্তু ২০০৬ সাল পর্যন্ত ৫ বছরের এই সংখ্যা ৩৫ শতাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। ৩০ শতাংশে বৃদ্ধির এই চমক সৃষ্টিকারী তথ্য সজীব ওয়াজেদ কোথেকে কিভাবে আবিস্কার করলেন সেটা খুলে বলেন নি। তবে তিনি এবং তার মার্কিনী বন্ধু মাদ্ররাসাসমূহে “আর্মি এন্ট্রান্স ট্রেনিং সেন্টার” তথা মাদরাসা সমূহে আর্মি এন্টান্স পরীার কথা আবিষ্কার করেছেন। এই পরীার কারণেই নাকি আর্মিতে মাদ্রারাসা শিতি ছাত্রদের রিক্রন্টমেন্টের েেত্র এ্যাসট্রোমোমিক্যাল বৃদ্ধি ঘটেছে। এই প্রবৃদ্ধি রোধ করার জন্য জনাব জয় সেনাবাহিনীকে সেক্যুলার ক্যাডট প্রতিষ্ঠান থেকে সেক্যুলার মনোভাব সম্পন্ন ছাত্রদেরকে ভর্তি করার ব্যবস্থাপত্র দিয়েছেন। সেক্যুলার হাসপাতাল সেক্যুলার ক্যাডেট স্কুল ইত্যাদি হাসিনা তনয়ের মতে ধর্মীয় উগ্রবাদ মোকাবেলার দু’টি গুরুত্বপূর্ণ পথ হলো সেক্যুলার হাসপাতাল এবং সেক্যুলার স্কুল প্রতিষ্ঠা। সেক্যুলার স্কুলও কি জিনিস সেটি না হয় চেষ্টা চরিত্র করে বোঝা যেতে পারে। ধারণা করা যেতে পারে যে এই পৃ. ৫ ধরণের স্কুলে ধর্মকর্ম, বিশেষ করে ধর্মীয় শিা দেয়া হবে না এবং ধর্মীয় নামগন্ধ রাখা হবে না। কিন্তু সেক্যুলার হাসপাতাল? সেটি আবার কোন বস্তুই যারা ধর্মকর্ম করেন তাদেরকে কি সেখানে চিকিৎসা দেয়া হবে না? এ ব্যাপারে হাসিনা তনয় এক অদ্ভূত থিওরী আবিস্কার করেছেন। তিনি এবার বাংলাদেশে ধর্মীয় মৌলবাদীদের সাথে সাথে ধর্মীয় হাসপাতাল ও আবিস্কার করেছেন। তিনি বলেছেন যে মানুষ যখন অসুস্থ থাকে অথবা মৃত্যু পথযাত্রী হয়। তখন ধর্মীয় হাসপাতালগুলো তাদের দুদর্শার সুযোগ গ্রহণ করে। তারা তখন অসহায় মানুষগুলোকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে চরম পন্থায় উদ্বুদ্ধ করে। ধর্মীয় হাসপাতালগুলো নাকি ধর্মীয় আদর্শ প্রচার করে। সেক্যুলার হাসপাতাল হলে সেগুলো নাকি ধর্মীয় হাসপাতালের প্রতিষেধক হবে। মানুষ বুঝতে পারছেন যে মক্তব মাদরাসা, সামাজিক প্রতিষ্ঠান, এমন কি হাসপাতালের আওয়ামী রাজনীতি ঢুকিয়ে আওয়ামী লীগ কি দেশটিকে দুইটি শিবিরে ভাগ করে সামাজিক সংঘর্ষ তথা গৃহযুদ্ধ বাঁধাতে চায়? এছাড়াও হাসিনা পুত্র আরেকটি পরিসংখ্যান দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, বিগত ৫ বছর অর্থাৎ জোট সরকারের আমলে মহিলাদের বোরকার বিক্রি ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রথম কথা হলো, এই পরিসংখ্যান যদি সত্যও হয় তাহলে তাতে তার মাথা ব্যথা কেন? আমাদের দেশের মহিলার পর্দানশীল হচ্ছেন। তাতে তো তার খুশী হওয়ার কথা। নাকি তিনি বাংলাদেশের মহিলাদেরকে মার্কিনীদের মত স্বল্পকালে অর্ধ উলঙ্গ দেখতে চান? সরকারী হুকুমে ফতোয়া জারি হবে? আওয়ামী লীগ মতায় গেলে এদেশের ওলামা মাশায়েখ এবং মুফতিদের পরিণতি হবে ভয়াবহ। যার প্রমাণ ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর। শপথ গ্রহণের আগেই জাতীয় মসজিদের খতিবকে জুতা নিেেপর মাধ্যমে বিদায় দিয়ে দলীয় একজন খতিব আটরশির পীর ভক্ত একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে খতিব করলেন। সারা দেশে জোট কর্মীদের কুপিয়ে জখম করলেন। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ আমলের ৬২ বছরে যে কথা কেউ বলার সাহস করেনি তেমন একটি হঠকারী কথা বলেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। তার নানা মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান ও ৭০ এর নির্বাচনে বলেছিলেন যে কোরআন ও সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন পাস করা হবে না। অথচ সেখানে তার নাতি শেখ হাসিনার পুত্র জয় বলেছেন যে, বাংলাদেশ সরকার ধর্মীয় মৌলবাদ সম্পর্কে ফতোয়া দেয়ার জন্য আলেম সমাজকে বলবে। কোরআন সুন্নাহ্ ও শরিয়া আইন সম্পর্কে সজীব জয়ের কোন পড়াশোনা আছে বলে মনে হয় না। তার জানা উচিত যে ফতোয়া একটি ধর্মীয় ব্যাপার। কোন ইস্যুতে ফতোয়া দেয়া হবে এবং কি ফতোয়া দেয়া হবে সেটি কারো মর্জি মেজাজ বা হুকুমের ওপর নির্ভর করে না। আওয়ামী লীগ সরকার মতায় এসেছে, এই ধরনের এ্যাডভেনচারিস্ট পদপে গ্রহণ করে তাহলে সারা দেশের আলেম ওলামাই শুধু নয়।এদেশের ধর্মীয় জনতাকে তারা িেপয়ে তুলবেন। এটি দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য মঙ্গলজনক হবে, নাকি দেশকে অশান্ত করবে, সেটি সজীব ওয়াজেদ তথা আওয়ামী লীগকে ভেবে রাখা উচিত। সজীব ওয়াজেদ জয়ের তত্ত্ব ভয়ংকর। বর্তমানে মতায় গিয়ে আওয়ামী লীগ যদি সেই তত্ত্ব বাস্তবায়ন করতে চায় তাহলে তারা অগ্নিতে ঘৃতাহতি দেবেন। মনে রাখা দরকার গণআন্দোলন এবং রাজপথ তাদের একচেটিয়া সম্পত্তি নয়।

ঢাকায়, স্পেনের রাষ্ট্রদূত ইউরো বার্তার সম্পাদকের সাথে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময়।
ইউরো বার্তার সম্পাদক এম. এ. জলিল খান ডিসেম্বরে বাংলাদেশে সফরকালীন বাংলাদেশে অবস্থিত স্পেনের দূতাবাসের মান্যবর রাষ্ট্রদূত আরতোরো পেরছ-এর সাথে শুভ নববর্ষ -২০০৯ ইং উপল্েয তার কার্য্যালয়ে ১২ কামাল আতর্ক এভিনিউ, গুলশান-২, ঢাকায় এক শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন ইউরো বার্তার ঢাকা প্রতিনিধি, মাহবুবুল আলম, গ্রাম বাংলা টেকনিক্যাল সেন্টারের পরিচালক মোঃ শাহাদ হোসেন। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, চট্ট্রগাম জোনের ডি. জি আবুল হোসেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাবিব উল্যাহ্ প্রমুখ। ইউরো বার্তার সম্পাদক, স্পেনপ্রবাসী বাংলাদেশীয়দের বিভিন্ন সমস্যা উপস্থাপন করেন। যেমন, পুলিশ কিয়ারিং সার্টিফিকেটসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র সত্যায়িত এবং পারিবারিক ও ছাত্র ভিসা সংগ্রহ করতে দিল্লী যেতে হয়। অথচ বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস বাংলাদেশীয়দের ভিসা ইসু করতে বিলম্ব এবং কিছু সংখ্যক লোককে ভিসা না দেওয়ায়, তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাগজ-পত্র সংগ্রহ ও স্পেনের ভিসা নিতে না পারায় সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এ ব্যাপারে করণীয় কি জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন যে, যেহেতু বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিষয়ক মতপার্থক্য রয়েছে তাই সমস্যা হওয়া স্বাভাবিক। তবে এপ্রিলের শেষের দিকে বাংলাদেশে স্পেন দূতাবাসের কার্য্যক্রম চালু হলে বাংলাদেশীদের আর সমস্যা থাকবে না।

মাদ্রিদে আন্তর্জাতিক মেলাইউরো বার্তা ডেক্স ঃ মাদ্রিদস্থ বাংলাদেশ দুতাবাসের কমার্স মিনিষ্টার শফিউল আলম জানান যে, প্রতিবছরের ন্যয় এ বছরও মাদ্রিদে আন্তর্জাতিক মেলা আগামী ১২/১৪ ফ্রেব্র“য়ারী ২০০৯ইং অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ঝওগগঅ উদ্যোগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমন্ত্রিত হয়ে মেলায় যোগ দিচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্থান, ফিলিপাইন, থাইলেন্ড, ইন্দোনেশিয়া, কোরিয়া, চীন, মালেয়েশিয়া, হংকং, জাপান, চিলি, ব্রাজিল, পেরু, ইকুয়েডর, ভেনিজুয়েলা, রাশিয়া, ইউক্রেন, মেক্সিকো, সুইডেন, ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড, অষ্ট্রিয়া, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, ইতালি, পর্তুগাল, গ্রীসসহ অন্যান্য দেশ। উল্লেখিত দেশগুলি তাদের দেশীয় প্রস্তুতকারক দ্রব্যায়াদি মেলায় বিক্রয়ের জন্য উপস্থাপন করবেন।
বাংলাদেশ থেকে এ বছর ১২টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকগণ অংশগ্রহণ করার জন্য আবেদন করেছেন। গার্মেন্টস শিল্প, পাট শিল্প, মেলামাইন শিল্প হস্তশিল্পসহ অন্যান্য। এদিকে আমদের প্রতিনিধি মন্তব্য করেন যে, স্পেনের সাথে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বেড়ে চলছে বিশেষ করে সফিউল আলম কমার্স মিনিষ্টার হয়ে ২০০৫ সালে স্পেন দূতাবাসে যোগদান করার পর তিনি মাদ্রিদ বার্সেলনা, মালাগা, বেলেনছিয়াসহ বিভিন্ন প্রভিন্সের চ্যাম্বার অফ কমার্স-এর প্রতিনিধির সাথে সভা-সেমিনার করে বাংলাদেশীয় পণ্যের প্রচার অব্যাহত রেখেছেন।


সম্পাদকীয় - ১
বাংলাদেশের রাজনীতির গতিধারা প্রকৃতি, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কতটুকু দায়িত্ব, সচেতনতা আছে, পারস্পরিক সহনশীলতার কতটুকু পরিবর্তন এসেছে, তা কি কেউ সঠিক বলতে পারবে? নির্বাচনের পর সেই আগের মত হানাহানি, কাঁদা ছড়াছড়ি, উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়, দখলবাজি, টেন্ডারবাজি ইত্যাদি কি আগের মত চলতে থাকবে? নাকি কিছুটা হলেও পরিবর্তন আসবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার তো অনেক কিছু চাপিয়ে দিয়ে রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে চেয়েছিল। কিন্তু, সময়ের আবর্তনে চাপাতে তারা ব্যর্থ হলে এখন সেই কৌশল থেকে সরে আসেনি। সরকার কিছু প্রশাসনিক সংস্কার করেছে। তা আবার অনেকগুলো বিতর্কিত। অনেকগুলো সংখ্যাগরিষ্ট মানুষের বিশ্বাস ও মূল্যবোধ পরিপন্থী। সবচেয়ে বড় কাজ করেছেন তারা জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরির কাজটা আর্মির সহযোগিতায় করে। বিচার বিভাগ স্বাধীন কাগজে কলমে হলেও এখনও সরকারের নিয়ন্ত্রণ মুক্ত হয়নি। অনেক কাজ সংবিধান বহির্ভূতভাবে করেছে, ফলে ভবিষ্যত সরকার তাদের মনমত না হলে বৈধতা দেবে না বলে প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েছে। এতে সরকারের কাজের আর মূল্যায়ন কি থাকল? নারী উন্নয়ননীতি করে ধর্মীয় দলগুলোকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়া কি উচিত হয়েছে? সরকারের সকল েেত্র একটি দলকে তোষণ ছাড়া আর কিছু হয়নি। আকাশ ছোয়া দ্রব্যমূল্যের কারণে এই সরকার অনেক দিন আলোচিত হবে। কার লাভ হলো এতে? কথায় কথায় বলা হচ্ছে আমরা ১/১১ এর দিকে ফিরে যেতে চাই না। একজন রিক্সাওয়ালাকে একথা জিজ্ঞাস করুন। তারা কি বলে? তারা তো বলবে আমরা ১/১১ বুঝি না, আমরা ১৬ টাকা দরে চাল কিনতে চাই। ১৬ টাকা দরে চাল কেনা মানে কি ১/১১-এ ফিরে যাওয়া নয়? একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাকে নির্বাচন এবং বাংলাদেশকে নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কি তা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন ভাই, আমি বাংলাদেশকে নিয়ে কিছু প্রত্যাশা করি না। এ দেশ চালাচ্ছে আল্লাহ্ পাক, ভবিষ্যতে আল্লাহই চালাবে। ‘সন্ত্রাস’ সমাজ দেহের ভয়াবহ ক্যান্সার।
সবাই এক বাক্যেই স্বীকার করবে, বিগত সরকারের (১৯৯৬-২০০১) আমলটা ছিল সন্ত্রাসীদের স্বর্গরাজ্য। নাম বলার দরকার নেই সন্ত্রাসী কারা। চোখের সামনে জ্বল জ্বল করে ওঠে। জোট সরকারের প্রথম দিকে সন্ত্রাস বৃদ্ধি পেয়েছিল। কিন্তু অপারেশন কিনহার্ট এবং র‌্যাবের ক্রসফায়ারে অনেক সন্ত্রাসী নিহত হওয়ায় বর্তমানে কেউ সন্ত্রাসী হওয়ার আগে অন্তত হাজারবার চিন্তা করে। অবশ্য পাশ্ববর্তী দেশের কলকাতা আগরতলায় সেই আগেকার ন্যায় একটি দলের বাংলাদেশী সন্ত্রাসীরা আস্তানা গেড়েছে এখন তাদের দল মতায় এসে তারা দেশে ফেরেছে। সন্ত্রাস মুক্ত বাংলাদেশ কে না প্রত্যাশা করে? বাংলাদেশ দূর্নীতিতে বেশ কয়েকবার পরপর শীর্ষ স্থান লাভ করে। টি আই বির জরিপ অবশ্য বিতর্কিত প্রশ্ন সাপে ব্যাপার। বর্তমানে চলমান দূর্নীতি বিরোধী অভিযান পপাত দুষ্ট হওয়ায় ভবিষ্যতে এই ভয়াবহ অপরাধ থেকে সহজে বাংলাদেশের মানুষ মুক্ত হতে পারবে কিনা এ প্রশ্ন সবার মুখে মুখে। মজার ব্যাপার যারা যতই গলা ফাটিয়ে দূর্নীতির বিরুদ্ধে চেচাচ্ছে। তারাই দূর্নীতিবাজদের আইনি সহায়তা দিচ্ছে। তাই পাপাতমুক্ত কমিশনের দ্বারা দূর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চাই। হরতাল, অবরোধ, ধর্মঘট আরেক বিষফোঁড়া বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য। একদিনের হরতালে কয়েকশ কোটি টাকার তি হয়। কারা বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় হরতাল করেছে, ভাংচুর করেছে, দেশের বারোটা বাজিয়েছে। তারা কিভাবে দেশের উন্নতি করবে? তাই হরতালের অভিশাপ মুক্ত বাংলাদেশ চাই। এজন্য কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রয়োজনে আইন করে হরতাল কর্মবিরতি, শিক ধর্মঘট ইত্যাদি বন্ধ করা চাই। দেশকে স্বনির্ভর করার ল্েয উন্নয়নমুখী জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি চাই। খাল কাটা, কর্মসূচীর মত ব্যাপক জননন্দিত কর্মসূচী যে বা যারাই মতায় থাক না কেন পুনরায় চালু করা হোক। তবেই কৃষি নির্ভর দেশের অর্থনীতিতে প্রাণ সঞ্চার হবে বিদ্যুত গতিতে।
সেই স্বনির্ভরশীল বাংলাদেশের জন্য সাম্রাজ্যবাদের এজেন্ট বিশ্বব্যাংক। আই এম এফ, এডিবি, ইউ এন ডিপি-র খবরদারী থেকে বাঁচার কৌশল চাই। যাতে এক আনা দিয়ে পনের আনার গান গাইতে না পারে। বাংলাদেশের অর্থ দিয়ে বাংলাদেশ উন্নয়নের কাজ করবে, কেউ যেন মাতবরী করতে না পারে। দেশের রাজনীতিতে কূটনৈতিক হস্তপে এ জন্যেই বাড়ে। কূটনৈতিকদের জেনেভা কনভেনশন মেনে চলতে সাবধান করার শক্তি ও হিম্মত অর্জন করতে হবে, তবেই ১/১১ এর ন্যায় ষড়যন্ত্র বন্ধ করা যাবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীল আচরণের জন্য সংসদীয় গণতান্ত্রিক রীতি নীতি মেনে চলতে হবে। সকল সমস্যা সংসদেই আলোচনা করতে হবে। কোন কূটনৈতিকের বাসায় নয়। এটা আতœমর্যাদা সম্পন্ন জাতির পরিচয়। আজ প্রমাণিত হয়েছে জাতিসংঘের নামে চালিয়ে দেয়া চিটিটা ছিল ভূয়া। সুতরাং জাতিসংঘে সেনাবাহিনীতে নিযুক্ত সেনা সদস্যদের অজুহাতে যাতে কেউ ব্ল্যাক মেইলিং করতে না পারে, সেজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপকে সজাগ থাকতে হবে। এন জিও দের রাজনীতিতে হস্তপে বন্ধ করতে হবে। এজন্য এন জিও তোষণ কোন রাজনৈতিক দলের করা চলবে না। এন জিও দের বিভিন্ন অপকর্মকে আমলে নিয়ে সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে লাইসেন্স বন্ধ করে দিতে হবে। নইলে এদের কালো জিহ্বা আরো বিস্তৃত হয়ে দেশ, সমাজ, ধর্ম ও স্বাধীনতা গ্রাস করবে। দারিদ্র এক বিরাট অভিশাপ, হরতাল, দুঃশাসন, অপশাসনের কবলে পড়ে এবং এনজিওদের খপ্পরে পড়ে গরীব আরো গরীব হচ্ছে। ধনী আরো ধনী হচ্ছে। পুুঁজিবাদী আগমনের জন্য এ অবস্থা। তাই অর্থনীতিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে দারিদ্রতার হাত থেকে বৃহত্তর জনগোষ্ঠিকে বাঁচাতে হবে। আইনের অপব্যবহার আইনের শাসনের অভাবে মানুষ আজ বিচার প্রার্থী হতে ভয় পায়। বৃটিশ প্রণীত এ আইনে কোর্টে হাজির হতে হতে ফুতুর হতে হয়। রাজনৈতিক দলগুলোতে গণতন্ত্র, সহনশীলতা, একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ না থাকা বড়ই দূর্ভাগ্যের। আর যাতে জাতি পলাশীর অবস্থা; ১/১১ এর মুখোমুখি হতে না হয় এখন থেকেই সজাগ হতে হবে। সন্ত্রাসী, খুনী, ডাকাত, মাস্তানদের আস্তানা হচ্ছে কিছু কিছু মাজার। মাজার ব্যবসায়ীরা তাদের মুরীদ বানিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে। সুষ্ট তদন্ত করে এ বিষয়ে খতিয়ে দেখা হোক। অশিা-কুশিার কবল থেকে জাতিকে রার দায়িত্ব সকলের। শিা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করে সকল প্রকার বৈষম্য দূর করে ঢেলে সাজাতে হবে। এক সাগর রক্তের বদৌলতে পাওয়া আমাদের দেশের শত্র“র অভাব নেই আজ যে শত্র“, কাল সে বন্ধু। মনে রাখতে হবে এ স্বাধীনতা কারো দয়ার দান নয়। আমরা সেখানেই ভুল করি। এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রার দায়িত্ব শুধু সেনাবাহিনীর নয়। কৃষক, শ্রমিক, মজুর, কুলি, ঠেলাওয়ালা, রিক্সাওয়ালাসহ সকল পেশাজীবির। আমাদের দেশটা উন্নতির দিকে এগিয়ে যাক। দেশের সকল মানুষ মুখে শান্তিতে বসবাস করুক। ঐক্যবদ্ধভাবে শত্র“র মোকাবেলা করুক। এটা সকলের কামনা।
আমাদের প্রত্যাশা এখন এদেশে থাকবে না কোন হিংসা, হানাহানি, ঝগড়া, ফ্যাসাদ, থাকবে জাতি ধর্ম-বর্ণ। দলমত নির্বিশেষে পারস্পরিক কল্যাণ কামনা, সবাই স্ব স্ব ধর্মের বিধি-বিধান মেনে চলার এক সুখী সুন্দর পরিবেশ। এমন এক দেশ চাই। যে দেশকে নিয়ে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে বলতে পারি এ দেশকে নিয়ে আমরা গর্বিত; এদেশে জন্ম নিয়ে আমরা ধন্য।


সম্পাদকীয় -২
প্রবাসীরাই দেশের রত্ম -
প্রবাসে যারা থাকেন তারা দেশের জন্য করতে পারেন অনেক। করেছেন ও বলাচলে প্রবাসীদের পাঠানো বৈদাশিক মুদ্র বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদাশীক মুদ্রার রিজার্ভকে ¯িহতিশিল রাখে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান আয়ের উৎস প্রবাসে কর্মরত বাংলাদেশীরা। কিন—ু সেই প্রবাসীদের নিজেদের ইসুগুলোকে রাজনীতির চচার পাশাপাশি সমাধান করার জন্য চেষ্টা চালানো উচিত। প্রবাসের রাজনৈতি দলাদলি,বিভাগ,জেলা,আঞ্চলিকতা নিয়ে যে ভাগাভাগি তাহা ভুলে গিয়ে জাতীয় ¯¡ার্থে রাজনীতি করাই শ্রেয়।সাবেক চার দলীয় জোট সরকার তাদের বৃহদাকার মন¿ীসভায় প্রবাসী কল্যান মন¿ণালয় নামে একটি মন—নালয় যুক্তকরে ছিল। এই মন—নালয় প্রবাসীদের নানা প্রকার সমস্যাদুর করার কাজটি শুরু করে,বিশেষ করে মাইগ্রেণ্টওয়ার্কার আইনগত অধিকার বিভিন্নদেশে বসবাসকারী প্রবাসীদের সুবিদা-অসবিধার ভিক্তিতে প্রবাসী শ্রমিক কর্মচারীদের কল্যানে আইন প্রনয়ন বিধি-বিধান এবং রাষ্ট্রীয় ভাবে সমস্যাগুলির সহযোগীতার পদপে নিয়েছেন। সে যাই হোক,প্রবাসীদের কতগুলো গুরুত্বপূর্ন ইস্যু দীর্ঘদিন ধরে সমাধানের প্রতিশ্রতিতেই রয়েগেছে,বাস্তবে সে সব স¤পর্কে কিছু করাহয়নি। এমন একটি বিষয় প্রবাসীদের ভোটধিকারপ্রশ্ন প্রবাসে যারা কর্মরত রয়েছেন তাদের অধিকাংশই দেশের নাগরিকত্ব বজায়রেখেছেন। এরা দেশে তাদের উপার্জিত অর্থ পাঠাবেন,অথচ যে জাতীয় সংসদ ওই অর্থব্যয়ের বাজেট প্রনয়ন করে তার নির্বাচনে তাদের কোনে ভুমিকা থাকবেনা সেটা হতে পারে না। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের নাগরিকরা তার নিজদেশের ভোটের অধিকার ভোগ করার প্রয়োজনীয় ব্যব¯হা ও রাষ্ট্রের তরফ থেকে করা হয়। প্রবাসে কমিউনিটির নেতৃত্বকারীলোকগুলি সমমানুষীকতায় ফিরে এসে সমন¡য় করতে পারেন,তাদেরকে অবশ্যই রাজনৈতিক দলাদলিতে সময় না,কাটিয়ে দেশের সমস্যাগুলির ব্যাপারে সহায়তা করতে উদ্দোগী হতে হবে।আর প্রবাসী কল্যাণ মন¿নালয় যদি এ ব্যাপারে উদ্দোগ হয়,তবে সেটা আরো ভালো কথা,বর্তমান তত্বাবধায়ক সরকার শুধু মাত্র ব্রিটিস প্রবাসী বাংলাদেশীদের ভোটার করার ব্যাব¯হা নিয়েছেন। অথচ ৮০ ল(আশি) প্রবাসী ৬০০কোটি ডলার প্রতি বছর দেশে প্রেরন করে উন্নয়নে সহযোগীতা করেন।ইসি ও সরকরের উচিত দিমুখী প্রথা ভুলে সকল প্রবাসীদের গনতানি—ক অধিকার রা করা, ইসি এবং সরকার ভাবছেন এ সুযোখে পাশ¡ভর্তি দেশের নাগরিকরা সুযোখ গ্রহন করতে অসুবিধার সৃষ্টিকরতে পারে। কিন—ু পাশ¡বর্তি দেশথেকেতো অর্থ প্রেরন করে না। ইসি এবং তত্বাবধায়ক সরকারকে আহ্ব¡ান করি যে সকল দেশ থেকে রেমিটে›স প্ররন করা হয় সে সকল দেশের প্রবাসীদের ভোটার করা হোক।বাংলাদেশের গামেন্টস যাতে বিশে¡ অবাধ প্রবেশাধিকার পায় তার জন্য ও প্রবাসীদের মধ্যে অনেকেই সংগঠিত ভাবে উদ্দোগী হয়েছেন। ওয়াল্ড ট্রেড এর কারনে কোটা উঠে যাওয়ার পর বাংলাদেশ পোশাক শিল্পের েেত্র তীব্র প্রতিযোগীতার স¤মখীন হয়েছে। এ কারনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে বাংলাদেশের গামেণ্টসকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার উদ্দোগ গ্রহন করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসা হচিছল । সরকার এ ব্যাপারে চেষ্টা চালাচেছ। ইতি মধ্যে প্রবাসীদের প্রচেষ্টা সহ নানা প্রচেষ্টার কারনে মার্কিন কংগ্রেসে বাংলাদেশ সহ ১৪ টি দেশকে অবাধ বানিজ্যের সুযোগ দিতে ট্রেড অ্যাক্ট ২০০৫ উত্থাপিত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রবাসীরা ওই বিল যাতে কংগ্রেসম্যানদের লবি করার জন্য নিজেরাই উদ্দ্যোগী হয়ে কাজ করেছেন। প্রবাসীরা স¡-উদ্দ্যোগেই এ দেশ প্রেমের কাজটা করেছেন। একই বিষয়ে নজরে এসেছে ভারতের আন—ঃনদী সংযোগ প্রকল্প ও পরিবেশের ওপর এর বিরুপ প্রতি μিয়া স¤পর্কে প্রবাসীদের উদ্ধেগ বিশেষ করে আন—ঃজাতিক ফারেক্কাকমিটিরউদ্দ্যোগে।নিউইয়ুক,লল্ডন,প্যারিস,ব্রাসেলস,মাদ্রিদ,ফ্রংকফোট,জেনেভা,সুইডেন,মণ্টিয়েল এথে›স,টুকিও ও সিডনিতে বসবাসকারী প্রবাসীদের চেষ্টায় এদিবসটি পালিত হয়ে থাকে এবং বিভিনè সং¯হাকে স¥রক লীপি প্রদান করে থাকেন। নদীর পানির সমস্যা স¤পর্কে আন—ঃজাতিক জনমত সংগঠন,আঞ্চলিক েেত্র গনতানি—ক প্রগতিশীল,শক্তি সমূহের ঐক্য বদ্ধ কার্য ক্রম করার ব্যাপারে আন—ঃজাতিক ফারাক্ক কমিটির প্রয়াস কাজে লাগতে পারে। প্রবাসে এ ধরনের উদ্দ্যোগ বর্তমান বিশে^ সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করবে নিঃসন্দেহে।বাংলাদেশের মানুষ এখন বিশ^ জগতের বাসিন্দা একটি ¯বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিষ্টাহয়েছিল বলেই এই সুযোগ পেয়েছে প্রবাসীরা তাই দেশের প্রতি তাদের দায়বোধ থেকেই যায়। তেমনি যে প্রবাসীরা তাদের কষ্টার্জিত অর্থ বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে মোকাবেলায় কষ্টলদ্ধ অভিজ্ঞতা দিয়ে দেশকে সাহায্য করেছেন,তাদের স¤পর্কে ও দেশের মানুষের দায়িত^ আছে।তাই অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসী দের অবদান বাংলাদেশবাসী কি অস্বিকার করতে পারবে? বুকের মধ্যে অনেক কষ্ট চেপে আমরা প্রবাসী হয়েছি,স্বাধীন জন্মভুমিতে সকল অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার কথা ছিল আমাদের।কিন— স্বনির্ভরতার অভাবে সে সুখ আমাদের কপালে সইলনা। জন্মভুমি আমাদের জীবন দিয়েছে জীবিকা দেয় নাই,তাই বাধ্য হয়ে বেকারত^র অভিশাপ ঘুচাবার জন্য প্রিয় জন্মভুমি ত্যাগ করে প্রবাসী হতে হয়েছে আমাদের। প্রবাসে আসার প্রাক্কালে দুর্বল জনশক্তি রপ—ানী নীতি ও অসাধু আদম ব্যাপারীদের প্রতারণামূলক কার্যকলাপে অনেক দুভোগ পোহাতে হয়েছে।সরকারশুধুমাত্র একখানা ছাড় পত্র দিয়ে দায়িত^ পালন শেষ করেছেন।প্রবাসীরা নিজস্ব পুঁজি বিনিয়োগ করে প্রবাসে আসছে এবং নিজস্ব শ্রম,মেধাও চিন— চেতনা দিয়ে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে উপার্জিত অর্থ দেশে পাঠাচেছ। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটে›সই দেশের অর্থনীতির নায়ক।ইহা ছাড়াও জাতীয় আয়ের যোগান হিসাবে প্রবাসীরা সর্বমোট ১৫টি খাত থেকে অর্থ যোগান দিয়ে আসছে।অথচ প্রবাসীদের এত বড় অবদানের কোন মূল্যায়ন হচেছ না। বরং পদে পদে প্রবাসীরা দুর্ভোগের শিকার হচেছ।কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংক মাধ্যমে পাঠাতে না পেরে হুল্ডি মাধ্যমে দেশে পাঠাতে গিয়েও বঞ্চনার শিকার হন। প্রবাসে বিবিধ সমস্যা নিয়ে দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হয় তারপরও প্রবাসীরা থেমে নেই,অর্জিত অর্থ পাঠাচেছ দেশে,দেশের অর্থনীতির ভীত সচল রাখছেন।দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসীদের বিশেষ অবদানের খাত সমূহ ব্যাখ্যা সহকারে তুলে ধরা হলো।১. বৈদেশিক মুদ্রাÑ প্রবাসীরা বিদেশ থেকে ড্রাফট ও ব্যাংক ট্রা›ফারের মাধ্যমে যে বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণ করে আমাদের সরকার দেশে তাদের আত্মীয় স্বজনকে দেশী মুদ্রায় তা পরিষদ করে অথচ সরকার ফাল্ডে তা বৈদেশিক মুদ্রায় জমা থাকে। যা পরবর্তীতে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ বাড়াতে সাহায্য করে। ২. সঞ্চয়Ñপ্রবাসীরা যে টাকা দেশে প্রেরণ করে তার সবটা সাধারণত খরচ হয না। দৈনন্দিন খরচের হিসাব করে দেখা যায় যে প্রতি মাসে বা বছরে কিছু টাকা ব্যাংকে সঞ্চিত থাকে। দিনের পর দিন এই সঞ্চয় বৃদ্ধি পেয়ে যা ক্রমান^য়ে জাতীয় স ঞ্চয়ের সাথে যুক্ত হয়ে জাতীয় সঞ্চয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। আজ প্রবাসীদের সঞ্চয় বৃদ্ধির ফলে বাংলার গ্রামে অন—রে বিভিন্ন ব্যাংকের শাখার বিস্তৃতি ঘটছে।৩. বিনিয়োগÑবাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্টে দেখা গেছে যে,প্রবাসীদের প্রেরিত টাকা প্রায় প্রত্যেকটি তফশিলী ব্যাংকে একটি রিজাভ গড়ে উঠেছে।এ রিজাভ থেকে ব্যাংকগুলো বিভিন্ন শিল্পে,গৃহ নির্মাণে ও অন্যান্য উন্নযনমূলক প্রজেক্টে দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ দিয়ে থাকে। এইবিনিয়োগ দেশের অর্থনেতিক উন্নয়নে সাহায্য করছে। তাছাড়া প্রবাসীরা নিজের প্রচেষ্টায় এবং আত§ীয় স্বজনদের মাধ্যমে ুদ্র ও মাঝারী ধরনের শিল্গ কারখানা,ব্যাংক,বীমা ও কৃষি খামারে বিনিয়োগ করার প্রয়াস পাচেছ। ৪. মানি সার্কুলেশন Ñ প্রবাসীরা সাধারণত ব্যাংকের মাধ্যমে নগদ ডলার/পাউল্ড/ইউরো/দেশে টাকা পাঠিয়ে থাকে। অর্থনীতির ভাষায় টাকা স¤র্পকে একটি সুন্দর প্রবাদ আছে ’জীবদেহের প্রাণ যেমন রক্ত তেমনি অর্থনীতির প্রাণ হলো টাকা যে দেহে রক্ত বেশী সঞ্চারিত হবে সে দেহ তত বেশী সু¯হ হয়ে উঠবে। আজ এটা সত্য যে প্রবাসীদের জন্য আমাদের দেশের মানি সার্কুলেশন বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।৫. কর্মসং¯হান- প্রবাসীদের প্রচেষ্টায় বিভিন্ন েেত্র কর্মসং¯হান বৃদ্ধি পেয়ে কিছুটা হলেও আমাদের ব্যাপক বেকার সমস্যার সমাধান হচেছ। দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেওয়ার এটাই সবচেয়ে বড় অবদান। প্রধানতঃ যে সব ¯হানে কর্ম¯হান বৃদ্ধিপেয়েছে তা নিম্নে বর্ণিত হলো ক) বাংলাদেশ বিমান,বিমান বন্দর,বিমান বন্দর কাস্টমস এভিয়েশন মন—ণালয়ের সাথে জড়িত সং¯হা সমূহ। খ) ব্যাংক,বিনিয়োগ সং¯হা ও বীমা। গ) বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন বিভাগ (ধিমব ঊধৎহবৎ ধহফ গড়হবু উবধষবৎ)বিনিয়োগ। ঘ) ডাকবিভাগ ঙ) নির্মাণ শিল্প ও গৃহ সামগ্রী ।চ) পরিবহন শিল্প ছ)হোটেল রেস্টুরেণ্ট আপ্যায়ন ও বিভিন্ন বিনোদনমূলক সং¯হা সমূহ। জ) ঠিকাদারী ও জমি হস্তান—র ও বিভিন্ন সার্ভিস সেণ্টার। ঝ) ভ্রমণ ঞ) হাট বাজার দোকান ও অন্যান্য ুদ্র ব্যবসা বাণিজ্য। ট) ট্রাভেলস্ এজে›সী ও ম্যানপাওয়ার এজে›সী ঠ) ¯কুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন শিা প্রতিষ্ঠান।ড) হাসপাতাল,কিনিক ও গণ¯¦া¯হ বিভাগ। ঢ) পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন বিভাগ ত) মিনিস্ট্রি অব ম্যানপাওয়ার এন্ড লেবার থ) বিভিন্ন ুদ্র শিল্প যথা তার্ত ও বস্ত্র শিল্প,গার্মেণ্টস,জুতা,কসমেটিক ও অন্যান্য।দ) সর্বোপরি প্রবাস মন—নালয় ও সংশি দপ—র সমুহ।৬) শিা- প্রবাসে অব¯হানরত প্রবাসীদেও মধ্যে ৭০% খেটে খাওয়া মানুষ, যারা জীবিকার্জনের জন্যে বিদেশে না আসলে তাদের ছেলেমেয়েরা ¯কুল কলেজের মুখ দেখতে পেত না। অথচ আজ কোন প্রবাসী নেই যার ছেলেমেয়ে,ভাইবোন পড়াশুনা না করছ্যে। অনেক হৃদবয়া. প্রবাসী রয়েছেন যারা আত্মীয় ¯¡জন ছাড়াও অনাহার প্রতিবেশী ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার সাহায্য করছেন। কাজেই দেশের শিার হার বৃদ্ধিতে প্রবাসীদের অবদান অ¯¡ীকার করার নয়, আর শিাই জাতীর মেরুদণ্ড এবং অর্থনৈতিক ঊন্নয়নের চাবিকাঠি। ৭) পর্যালেচনা করে দেখা গেছে একজন প্রবাসীর কারনে ১৫টি খাত থেকে সরকার রাজ¯¡ আয় অর্জিত হচেছ খাতগুলো হলো (১) পাসর্পোট ইস্যু ফি (২) পাসর্পোট নবায়ন ফি(৩) পাসর্পোট রি-ইস্যু ফি (৪) পাসর্পোট এন্ডোজমেণ্ট ফি (৫) বিদেশে কর্মবিনিয়োগ ফি (৬) রিক্রটিং এজেণ্টে লাইসেন্স ও ইনকাম ট্যাক্র ফি (৭) ট্রাভেলস এজেন্সী লাইসেন্স ও ইনকাম ট্যাক্র ফি (৮) এয়ারর্পোট ট্যাক্র (৯) এয়ারর্পোট প্রবেশ ফি (১০) কাস্টম ফি (১১) ডাক্তারী পরীা ফি (১২) বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময ফি (১৩) ভ্রমন কর (১৪) প্রবাসী বাংলাদেশীর অব¯হানরত রাষ্ট্র সমূহের ভোগ্য পণ্য, পোশাক সামগ্রী ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী রপ—ানীকারকদের লাইসেন্স ও ইনকাম ট্যাক্র ফি (১৫) এছাড়া প্রবাসীদের আত্মীয়স¡জনরা যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে ডাক,তার,ফ্যাক্র,টেলিফোন,ইণ্টারনেট,ই-মেইল ও মোবাইল ফোন এর মাধ্যমে সরকারকে প্রচুর রাজ¯র্¡ প্রদান করছে।কিন— সরকার রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠী আজ পর্যন— প্রবাসীদের সমস্যা সমাধানে তেমন কোন উলে−খযোগ্য পদপে গ্রহন করেননি।যদিও বিগত সরকার প্রবাসী মন—নালয় গঠন করেছেন। প্রবাসীদের সমস্যা সমাধানে পরিকল্পিত তেমন কিছু চোখে পড়ছে না।প্রবাসীদের সমস্যাসমূহের সমাধান ও মৌলিক অধিকার সংরণের নিমিত্তে ২১ দফা দাবী নামা প্রণয়ন করে,দূতাবাস কর্তৃপরে মাধ্যমে তৎকালিন গনপ্রজাতন—ী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন—ী খালেদা জিয়া সমীপে ¯¥ারকলিপি প্রেরন করা হয়েছিল।বিগত ৩০শে মে ২০০৪ প্রবাসী ও কমংসংস্থান বিষয়ক মাননীয় প্রতিমন—ী (অবঃ) মেজর কামরুল ইসলাম সাহেবেকে সরাসরি ¯¥ারকলিপি আকারে পাঠানে হয়। তখন প্রবাসীদের আশা ছিল প্রবাসী কল্যাণ মন—নালয়কে একমাত্র প্রবাসী কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন। যা থেকে (ক) দুর্ঘটনাজনিত কারণে পঙ্গু প্রবাসী ও তার পরিবার (খ) প্রবাসে জেলবšদী প্রবাসী ও তার পরিবার (গ) প্রবাসে মৃত্যুবরণকারীর পরিবার (ঘ) আক¯িমক বরখাস্ত জনিত কারনে প্রবাস ফেরত প্রবাসী (ঙ) রাষ্ট্রীয় গোলযোগে প্রবাসে আটকে পড়া প্রবাসী ও বিদেশফেরত অসহায় প্রবাসী (চ) বিদেশে মালিক ও আদম বেপারীর প্রতারণার শিকার প্রবাসী (ছ) প্রবাসে বা দেশে মালিক দুরারেগ্য রেগে আক্রান— প্রবাসী (জ) পঙ্গু জেলবšদী ও প্রবাসে মৃত্যুবরনকারীপ্রবাসীদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার আংশিক খরচ (ঝ) বরখাস্তজনিত কারণে মালিক পরিবর্তন ও রেসিডেণ্ট কার্ড নবায়ন (ঞ) বিদেশে গমনইচছুক দেশীয় বেকার ও প্রবাসীবেকারদের বিদেশে কর্ম উপযোগী দ শ্রমিক হিসাবে গড়ে তুলতে বিবিধ কারিগরী প্রশিণের ব্যবস্থা এবং (ট) প্রবাস বোরদের নাম মাত্র খরচে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থ সহ সমস্যগ্রস্থ প্রবাসীদের পুনর্বাসনের নিমিত্তে এককালিন আর্থিক অনুদান ও বিস্তিভিত্তি ফেরযোগ্য ঋণ প্রদানের পদপে নেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে।নিবন্ধে উদ্ধৃত বিষয়গুলো নিতান—ই ¯পর্শকাতর ও বা¯তবতার ¯¦¦ার বহন করে। তাই প্রবাসীদের সাথে সংশি−ষ্ট রাজ¯¦ আয়ের খাতসমূহের অংশ বিশেষের সাথে (নূন্যতম ৩% থেকে ১০%) (১) ¯¥ারক ডাকটিকেট (২) বাৎসরিক প্রবাসী কল্যাণ ট্রাস্টের সাহায্যার্থে বিশেষ লটারী প্রতিযোগিতা ও (৩) এয়ারর্পোট ট্যাক্রের সাথে প্রবাসী কল্যাণ ট্রাস্ট ফি সংযোজন করে সরকার তথা প্রবাস মন—ণালয় প্রবাসীদের প্রাণের দাবী তথা বাচার দাবী প্রবাসী কল্যাণ ট্রাস্টগঠনে যথাযথ পদপে গ্রহণে সচেষ্ট হলে বর্তমান সরকারের জন্য তা মাইলফলক হিসাবে বিবেচিত হবে।এতদ সংক্রান— ব্যাপারে প্রবাসী বাংলাদেশী মৈত্রী সমিতি, প্রবাসী কল্যান সমিতি,এর তথ্য গবেষণা ও পরিকল্পনা সেল সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদানে বদ্ধপরিকর।


যুদ্ধাপরাধ ও কিছু কথা ঃ উপসম্পাদকীয়
- আলী আক্কাস
৩৮ বছরের পুরানো ইস্যু নতুন করে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা চলছে বর্তমান সরকার প্রধান শেখ হাসিনা ও তার দলের কিছু মন্ত্রী, এমপির থেকে। তাহলো একাত্তরে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। আন্তর্জাতিক সংস্থার নিকট, চিঠি ও পাঠিয়েছেন এবং সংসদে এ নিয়ে খুব উত্তেজনা বক্তব্যও দিচ্ছেন। জীবিত দুজন সম্মানিত মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার একজোট হয়ে এ দাবি উঠিয়েছেন সরকারের কাছে। নির্বাচন কমিশনের সাথে বৈঠক শেষে একটি দলের সেক্রেটারী জেনারেল সাংবাদিকদের সাথে প্রশ্নোত্তরকালে কিছু বক্তব্যের রেশ ধরেই এ দাবি তোলা হয়েছে। বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় যা দেখেছেন এবং দর্শক শ্রোতারা যা তার মুখে শুনেছেন, তাহলো ১৯৭১ সালে এ দেশে স্বাধীনতা বিরোধী কেউ নেই। এবং এ দেশে যুদ্ধাপরাধ কেউ নেই। এ দুটো বক্তব্যই এখন দলটিকে নতুন প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে। এ দুটো বাক্যকে ফুলিয়ে ্যাপিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে একটা নির্দিষ্ট পরিণতির দিকে নিয়ে যাওয়ার কাতারে শামিল হয়েছে আন্তর্জাতিক পরাশক্তিসহ দেশীয় কিছু রাজনৈতিক দল। পরজীবি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠি।
বিষয়টি কিছুদিন আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য এবং নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছিল। নির্বাচন কমিশনের সাথে নির্বাচনী বিধি বিধান সংশোধনের পরামর্শ দিলে মূল বৈঠকে এরই মধ্যে বেশ কিছু রাজনৈতিক দল ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দল হিসেবে কোন দলকে নিবন্ধন না করার জন্য। নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করেছিল। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, ধর্মীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে নিষিদ্ধ অথবা বিকলাঙ্গ করে রেখে ধর্ম নিরপেতাবাদী এবং বাঙ্গালী জাতীয়বাদীরা ভবিষ্যৎ নির্বাচনে খালি ময়দানে গোল দিয়ে বিজয়ী হয়ে মতা দখলের আইনী এবং রাজনৈতিক কুটকৌশলগত চাপ দুটাই অব্যাহত রেখেছিল। নব্বই ভাগ মুসলমানের এদেশে এ হীন রাজনৈতিক চক্রান্ত এবং কূটকৌশল কোন দিনই শুভ ফল বয়ে আনবে না। ব্যাকফায়ার হতে বাধ্য।
যেমনিভাবে এদেশ ধর্মনিরপে সংবিধানের মৃত্যু হয়েছে এবং ধর্ম নিরপেতার লাশের ওপর সগৌরবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ তায়ালার ওপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস। রাষ্ট্রীয় ধর্মের মর্যাদা পেয়েছে ইসলাম। প্রধানমন্ত্রীর আসনের পেছনে স্থান পেয়েছে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্। আর বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ পরিচিতি পেয়েছে একটি মডারেট মুসলিম দেশ হিসেবে। প্রাসঙ্গিক বিষয়ে ফিরে আসা যাক। উল্লিখিত দুটো বাক্যকে দু’ভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। প্রথমত ঃ দুটো বক্তব্যই সঠিক মনে হবে যদি এভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হয়ে যাওয়ার পর দেশের সব নাগরিক স্বাধীনতাকে মেনে নেয়ায় এখানে আর কোন স্বাধীনতা বিরোধী নেই। বিগত ৩৮ বছরে এদেশে একজন যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে ও মামলা আদালত পর্যন্ত গড়ায়নি। শান্তি তো দূরের কথা। হ্যাঁ যুদ্ধাপরাধী ছিল ১৯৫ জন পাকিস্তানী তারা স্বদেশে ফিরে গেছে বিনা বিচারে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের এক মহান সেক্টর কমান্ডার মরহুম মেজর এম. এ জলিলের এ বিষয়ক বক্তব্য হচ্ছেÑ হানাদার পাক বাহিনী যারা দীর্ঘ ৯ মাস ধরে বাংলাদেশের বুকে অবলীক্রমে গণহত্যা চালিয়ে ইতিহাসের পাতায় এক জঘন্য অধ্যায় সৃষ্টি করল, তাদেরকে ভারতীয় সেনাবাহিনী কিসের স্বার্থে উদ্ধার করে নিয়ে গেল ভারতে? সেসব হত্যাকারী গণদস্যুদেরকে মুক্তি যোদ্ধাদের কাছে হস্তান্তর করা হলো না কেন? যারা মুক্তিযুদ্ধের মৈত্রী বাহিনী হিসেবে বাংলাদেশের দরদি সেজে বাংলাদেশীদের উদ্ধার করতে এলো, তারাই বাংলাদেশীয়দের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়া পাকিস্তানী হত্যাকারী বাহিনীকে নিরাপদ আশ্রয়ে উদ্ধার করে নিয়ে বাংলাদেশীয়দের প্রেমের পরিচয় দিয়েছে না পাঞ্জাবি প্রেমের পরিচয় দিয়েছে? মুক্তিযুদ্ধের মৈত্রীবাহিনী মুক্তিযুদ্ধাদের হত্যাকারীদের প্রতি অতটা দরদি হয়ে ওঠার পেছনে কারণটা কি ছিল? রসুনের গোড়া না কি এ জায়গায়। এসব মার্সিনারি আর্মির গোড়া ও একই জায়গায়, আমেরিকার পেন্টাগনে। সুতরাং ‘মুক্তিযুদ্ধ’, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধ’, ‘পাক ভারত যুদ্ধ’ ওসব কিছ্ইু না লৌকিকতা মাত্র। সংগ্রাম মুখর জনগণকে বিভ্রান্ত এবং হতাহত করে আন্তর্জাতিক মুরব্বিদের প্রভাববলয় ঠিক রাখার হচ্ছে এসব যুদ্ধ যুদ্ধ খেলার আসল উদ্দেশ্য। তা নাহলে মানবতার খাতিরে ও আন্তর্জাতিক মহল থেকেই বাংলাদেশে গণহত্যাকারী পাকিস্তানি নর পশুদের বিচারের দাবি শোনা যেত। না, তেমন কিছুই হয়নি হবেও না, যতদিন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মহল অভিশপ্ত সাম্রাজ্যবাদের প্রভাব বলয় থেকে মুক্ত না হবে।
এবার দেখা যাক, ৯৩ হাজার পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দীকে কিভাবে স্বদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল কোন চুক্তি বলে? শোনা যাক সে ইতিহাস। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানী বাহিনী ঢাকায় ভারতীয় বাহিনীর কাছে আতœসমর্পণ করে। আতœসমর্পনের দলিল সই করেন পাকিস্তানের পে জেনারেল নিয়াজী এবং ভারতের পে জেনারেল অরোরা। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানী এ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন নি। এরপর পরাজিত পাকিস্তানী সেনাদের ভারত তাদের দেশে নিয়ে যায়। এরপর ২ জুলাই ১৯৭২ সালে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ঐতিহাসিক চুক্তি স্বারিত হয়। যা সিমলা চুক্তি নামে পরিচিত। দু দেশের বিবাদমান সমস্যাগুলোর সমাধান করে দুদেশের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্যেই এ চুক্তি স্বারিত হয়। বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এ চুক্তির প্রতিপূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন। ১৭ এপ্রিল ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ ভারতের সাথে সিমলা চুক্তির আলোকে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ভারত এবং ভারত-পাকিস্তানের কয়েক দফা আলোচনার পর বাংলাদেশ বিষয়ে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে ২৮ আগষ্ট ১৯৭৩ সালে। দিল্লিতে এক চুক্তি স্বারিত হয়। এ চুক্তির মাধ্যমেই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান ত্রিদেশীয় নাগরিক বিনিময় কার্যক্রম শুরু হয় ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩ থেকে। এতে করে প্রায় ৩ লাখ নাগরিক নিজ নিজ দেশে ফিরে আসে। ফেব্র“য়ারী ১৯২৪ সালে পাকিস্তান বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব মেনে নিলে ৫ এপ্রিল থেকে ৯ এপ্রিল ১৯৭৪ ভারতের নয়াদিল্লীতে ত্রিদেশীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ১৯৫ জন যুদ্ধবন্দীর বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। এ বৈঠকে বাংলাদেশের পে অংশ নেয় ড. কামাল হোসেন, ভারতের পে সরদার সারওয়ান সিং এবং পাকিস্তানের প আজিজ আহমদ। বৈঠক শেষে ত্রিদেশীয় চুক্তি স্বারিত হয়। চুক্তির অনুচ্ছেদ ১৩ এর বক্তব্য ছিল যুদ্ধপরাধীদের তৎকালীন সরকারের প থেকে মা করে দেয়ার এ হলো ইতিহাস। এটা বাংলাদেশ, ভারত পাকিস্তানের রাষ্ট্রপরে এক ঐতিহাসিক চুক্তি। আর বাড়িয়ে না রেখে কৈফিয়ত ও কিছু কথা উদ্ধৃতি দিয়ে শেষ করছি। স্বাধীনতা অর্জনের ৩৮ বছর পরেও আজ পরাশক্তিদের উসকানিতে যারা নতুন করে পুনরায় স্বাধীনতার প-বিপে কিংবা মৌলবাদের ভূত নিয়ে খেলা করতে আগ্রহী তাদের একটি সত্য জেনে রাখা প্রয়োজন জাতির আজ প্রয়োজন স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রা করা, স্বাধীন মাটিতে বসবাসকারী প্রত্যেক মানুষের ন্যায় সঙ্গত অধিকার, মর্যাদা এবং নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। এই অধিকার প্রতিষ্ঠা করার পথে আজ যেসব পরাশক্তিদেশসহ দেশীয় পরজীবি সামাজিক সংগঠন ও রাজনৈতিক শক্তি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে, প্রকৃতপে তারাই চিহ্নিত হবে দেশ ও জাতির শত্র“ হিসেবে। সেই ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণই কেবল সর্বকালের দেশ প্রেমের সনদ পত্র হতে পারে না। যদি কেবল তা হতো, তাহলে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পরে যাদের জন্ম তারা দেশপ্রেমীকের সারিতে দাঁড়ায় কিসের ভিত্তিতে?
আমরা কি মরহুম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এবং স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বাংলাদেশীরা জানে কিভাবে মা করতে হয়। অতীতকে ভূলে গিয়ে নতুনের পথে যাত্রার যে আহ্বান, তাকে প্রাধান্য দিয়ে জাতীয় ঐক্যের নতুন ভিত রচনা করতে পারি না? ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে পরাশক্তিদের ডেকে এনে। দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষগুলিকে সন্ত্রাসী বানিয়ে লাভ কি? হ্যাঁ লাভ একটাই পরাশক্তি দেশগুলির দেশ দখলের একটি কৌশল, সন্ত্রাস দমনের নামে দেশ দখল অর্থাৎÑ তেল, গ্যাস, সম্পদ লুটকরা এবং বন্দরঘাঁটি স্থাপন-ই তাদের মূল উদ্দেশ্য। সেই দিন আর বেশী দূরে নয়, যেদিন বাংলাদেশের ভূখন্ডে পরাশক্তি দেশের পাঠানো সৈন্যদের অনুপ্রবেশ ও অবস্থান।


বাংলাদেশ দূতাবাস ইন মাদ্রিদ স্পেনপ্রেস বিজ্ঞপ্তি ঃ
বাংলাদেশ দূতাবাস ইন স্পেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মনোনীত স্পেন প্রবাসী বাংলাদেশীয়দের জন্য একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি বাংলাদেশের ভাবমূর্তি স্পেনে তুলে ধরা ও দুদেশীয় সরকারী পর্যায়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন এবং ব্যবসা-বাণিজ্য সুগঠিত করা। প্রবাসীরা তাদের প্রয়োজনে কাউন্সিলর ডেক্সে বেশী আসা যাওয়া করতে হয়। পাসপোর্ট পেতে, নবায়ন করতে, বিভিন্ন ডকুমেন্ট সত্যায়িত করতে, বিভিন্ন তত্ত্ব জানতে বা বুঝতে। অথচ অন্যান্য দেশের ন্যায় মাদ্রিদের দূতাবাসের কাউন্সিলর ডেক্সে বাহকদের হয়রানির এবং অনিয়মের কথা শুনা যাচ্ছে। এদিকে কাউন্সিল-র ডেক্সে কর্মকর্তার অভিযোগ কিছু কিছু বাহক নিয়ম কানুন না বুঝে দেশ থেকে সংগ্রহ করেন সেই সব পাওয়া কাগজপত্র সঠিক নয়। ভূল আছে বললে দূর্ব্যবহার করে থাকেন। অহেতুক গালি গালাজ পর্যন্ত করেন। অনেক সময় দালাল শ্রেণীর কিছু লোক দূতাবাসে অন্যের কাজ করাতে এসে দূর্ব্যবহার এবং পেশী শক্তি খাটাতে চান। আমাদের উচিত উভয়ের মধ্যে আরো বেশী আন্তরিক হওয়া। স্নেহ, ভালবাসা এবং শ্রদ্ধা এই তিনটি যেমন থাকতে হবে কর্মকর্তাদের তেমনি থাকতে হবে বাহকদের মাঝে তাহলে উভয় উপকৃত হতে পারবে। সঠিক তত্ত্ব জেনে নির্ভূল ডকুমেন্ট সংগ্রহ করা উচিত। কর্মকর্তাদের উচিত সেবা করার মানুষিকতা।

উপজেলা নির্বাচন অনেক কেন্দ্রে ভোটারের চেয়ে নিরাপত্তা রীয় সংখ্যা বেশী ঢাকা প্রতিনিধি ঃ
উপজেলা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ বৃহস্পতিবার আটটায় শুরু হওয়ার পর ভোটারদের উপস্থিতি খুব কম ছিল। অভার উপজেলায় হেমায়েতপুর আল নাসির ল্যাবরেটরি স্কুল কেন্দ্রে প্রথম এক ঘন্টায় ভোট পড়েছে ৫০টিরও কম। সিংগাইল হরিণধরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোটারের চেয়ে সেখানে নিরাপত্তা রীর সংখ্যাই বেশী। একই দৃশ্য দেখা গেছে সাভার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ কেন্দ্রেও শহরের থানা রোডে অবস্থিত এ কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার পটিয়া এ জে চৌধুরী কলেজ ও তালিমুল হক মাদ্রাসা কেন্দ্রে আনোয়ারা উপজেলায় আনোয়ারা, আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও বশিরুজ্জামান স্মৃতি শিা কেন্দ্র, রাশখালী উপজেলার পূর্ব বৈলগাঁও কেন্দ্র এবং সীতাকুণ্ড উপজেলার ফৌজদারহাট কে এম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে প্রথম দুই ঘন্টায় ভোটার উপস্থিতি খুবই কম। সকল সাড়ে নয়টায় দেখা গেছে আনোয়ারা উপজেলার আনোয়ারা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ১০টি বুথের মধ্যে ৪টিই ফাঁকা। এছাড়া অন্য বুথের লাইনে গড়িয়ে ছিলেন মাত্র ৩৮ জন ভোটার এবং এদের মধ্যে ১১ জন নারী। গাজীপুর শহরের মুনীপাড়া এলাকায় অবস্থিত মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোটারের সংখ্যা খুবই কম। এ কেন্দ্রের পোলিং অফিসারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা অলসভাবে বসে ছিলেন।


কেন্দ্র দখল ও ব্যাপক সহিংসতার মধ্য দিয়ে উপজেলা নির্বাচন ঃ
ভোটগ্রহণের সময় বিভিন্ন স্থানে ভোট কেন্দ্র দখল ও সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের পর মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার একটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত থাকার পর আবার শুরু হয়েছিল। কেরানীগঞ্জে জাল ভোট দেয়ার অপরাধে পাঁচ ব্যক্তিকে সাজাও দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। ফেনীর ছাগলনাইয়া ও কুমিল্লার মুরাদনগরে ভোটকেন্দ্র দখলের খবর দিয়েছেন সংবাদদাতারা। পাবনার সুজানগরে ভবানীপুর এবং চরভবানীপুর কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা এজেন্ট ছাড়া আর কোন এজেন্টদের ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন পাবনা সংবাদদাতা। মৌলভীবাজারে কমলগঞ্জে উপজেলার একটি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ ও বি. এন. পি. সমর্থকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সকালে মাইজগাঁ প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ঘটনা ঘটে। এরপর ম্যাজিষ্ট্রেট এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ জেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি কম বলে জানিয়েছেন সংবাদদাতারা। কোন কোন কেন্দ্রে বেলা ১১ টা পর্যন্ত ভোটারদের উপস্থিতি ছিল না বলে জানিয়েছেন তারা। চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও বি. এন. পি প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষে তিনজন আহত হয়েছে। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শাহরাস্তী ও হাজিগঞ্জ উপজেলার আওয়ামী লীগ
প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকার কিছু কেন্দ্র দখল করে রাখে এবং বি. এন. পি প্রার্থীরা এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনা জানা যায়। কুমিল্লার লাকসাম ৫১টি কেন্দ্রের মধ্যে বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে যেতে ভোটারদের বাঁধা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাংবাদিকরা। পাশাপাশি দণি চাঁদপুর ভোট কেন্দ্রের ২ সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ভবানীপুর আনোয়ার হোসেন ও পরিমল কান্ডিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ স্বীকার করেছেন প্রিজাইডিং অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান। এছাড়া বেড়া উপজেলার ভবানীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগের এক প্রার্থীর ওপর হামলা চালিয়েছে আওয়ামীগেরই অপর প্রার্থীর কর্মী সমর্থকেরা। এ ঘটনার কিছুণের জন্য ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকে। চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় মধ্যে নলুয়ায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুদল মোনাফের বাড়ী সংলগ্ন ভোটকেন্দ্র তার পোলিং এজেন্টরা তার প্রতীক দোয়াত কলমে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ফেলেছেন বলে জানা গিয়েছে। তাছাড়া সকালে ভোটগ্রহণের পর থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, সকাল ভোটারদের উপস্থিতি ছিল নগন্য। বুধবার যাতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর দেয়া দুমকি-ধমকি এ নগন্য উপস্থিতির অন্যতম কারণ বলে জানা গিয়েছে। ভোটকেন্দ্র দখলের খবর পাওয়া গেছে ফেনীর ফলগামী উপজেলায়। সেখানে পূর্ব বস্পিতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জয়নাল হাজারীর সিটয়ারিং কমিটির সদস্য একরামূল হকের সমর্থকেরা ২ ঘন্টা দরজা বন্ধ করে নিজেদের পে ব্যালটে সিল মেরেছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরপর সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। চট্টগ্রামের ফটিক ছড়িতে ৫টি কেন্দ্র দখল করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পে ব্যালটে সিল মারা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। ফেনী সদর উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হারুনুর রশিদকে ফেনী পাইলট হাইস্কুল কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের কর্মীরা মারধর করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছিল। দেশের প্রতিটি উপজেলায় আওয়ামী লীগের এম. পি. প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রীরা সরাসরি কেন্দ্র দখলে সহযোগীতায় অংশ নেন এবং বি. এন. পি প্রার্থীর এজেন্টকে মারধর করে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পে ব্যালেট সিল মারার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।


মন্ত্রী এমপিরা মতার অপব্যবহার করেছেন। এমনটি আশা করিনি ঃসিইসি নির্বাচন নিয়ে অসন্তুষ্ট নির্বাচন কমিশন জানিয়েছেন আমাদের ঢাকা প্রতিনিধি ঃ
- মাহবুব রামেল
তৃতীয় উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব, ব্যলেট পেপার ছিনতাই ও সহিংস ঘটনার তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশন। ড. এটি এম শামসুল হুদা। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে রাজনৈতিক প্রভাব কিভাবে প্রতিহত করা যায়, সে বিষয়ে সরকারের সাথে আলোচনা করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এছাড়া নির্বাচনে যেভাবে সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা পরিবেশ বিঘিœত করেছে তা কাম্য ছিল না বলে মন্তব্য করেন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) এম সাখাওয়াত হোসেন। উপজেলা নির্বাচন সম্পর্কে এভাবেই সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে নির্বাচন কমিশন। সিইসি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের পর রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে কিছু পরিবর্তন আসছে। এমনটাই আশা করেছিলাম আমরা। মন্ত্রী-এমপিরা মতার অপব্যবহার করবেন। এমনটা আশা করিনি। নির্বাচনে রাজনৈতিক প্রভাব কিভাবে প্রতিহত করা যায় সে বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। উপজেলা নির্বাচনে ব্যালট পেপার ছিনতাই হয়েছে। অনাভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য চিঠি-দেয়ার পরও কেউ কেউ কেন্দ্রে গিয়ে বসে থেকেছেন। একজন সংসদ সদস্য রিটানিং অফিসারকে মারধর পর্যন্ত করেছেন। সব মিলিয়ে এ নির্বাচন নিয়ে কমিশন সন্তুষ্ট নয়। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আমাদের ধারণা জন্মেছিল রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে একটি পরিবর্তন এসেছে। এ নির্বাচনে ও আমরা হয়তো তার ছায়া দেখতে পাবো। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো না হলে ও ভাল একটা নির্বাচনই হবে বলে ভেবেছিলাম। তা হলো না। কমিশনের কারণে এ নির্বাচণ খারাপ হয়নি। কমিশনের কর্মকর্তারা সঠিকভাবেই নির্বাচন পরিচালনা করতে চেয়েছিলেন। তবে রাজনৈতিক প্রভাবে অনেক েেত্রই অসুবিধা হয়েছে। এটা প্রতিহত করার উপায় আমাদের বের করতে হবে। প্রয়োজনে রাজনৈতিক দল ও সরকারের সাথে কমিশনকে আলোচনা করতে হবে। কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এই নির্বাচনে আমি আদৌ সন্তুষ্ট নই। আমাদের প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশী। কয়েকটি নির্বাচনী এলাকায় যে গণ্ডগোল হয়েছে মতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই এজন্য দায়ী।


শিাঙ্গনে সহিংসতা ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত দায় বিচিন্তা
- সাদেক খান
১৯৯৯ সালের মে মাসে একটি জাতীয় দৈনিকের প্রথম পাতায় মন্তব্য প্রতিবেদনে শিরোনাম ছিল ‘প্রধানমন্ত্রী, ছাত্রলীগ সামলান’। এখনকার মতো তখনো প্রধানমন্ত্রীর পদ অলঙ্কৃত করেছিলেন আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা। সেটা ছিল তার প্রথম সরকারের মেয়াদ মধ্যকাল। ওই মন্তব্য প্রতিবেদনের উপল ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস দখলের দস্যুতাতাড়িত সশস্ত্র ছাত্র রাজনীতি। ১৯৯৯ সালের ৮ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জহুরুল হক হলে তৎকালীন সরকারি দল আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন (এখন সহযোগী সংগঠন) ছাত্রলীগের দুই পে বন্দুক যুদ্ধ হয়। তাতে ৫৫ দফা গুলিবিনিময়ে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়। ওই সময় শুধু জহুরুল হক হল নয়, ছাত্রলীগের সশস্ত্র উপদলগুলোর মধ্যে গোটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দখল নিয়ে এরকম আরো সন্ত্রাস আর বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেছিল। এ ‘রক্তাক্ত যুদ্ধ’ হয়েছিল ছাত্রলীগের পাণ্ডাদের প্রতি একরকম বানিয়ে রাখিনি। কিন্তু অন্য দল যখন অস্ত্র নিয়ে আসে, সন্ত্রাস করে, তখন আমাদের ছেলেরাও উৎসাহী হয়, তারাও তো তরুণ।... সন্ত্রাসীরাই অনেক সময় ছাত্রলীগে জোর করে যোগ দেয়। সেটা কী করা যাবে?’ এবার দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের ক্যাম্পাস দস্যুতা কিংবা সাধারণভাবে আওয়ামী লীগের নির্বাচনোত্তর বি.এন.পি-খেদা সহিংসতাকে আকার-ইঙ্গিতেও প্রশ্রয় দেননি। কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সব রকম জবরদস্তি ও আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের প্রবণতার বিরুদ্ধে। অন্য দলমত ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রতি গণতান্ত্রিক সহিষ্ণুতা ও সহাবস্থানের পরিবেশ রার কথা বলেছেন। কিন্তু তাতে ফলোদয় হচ্ছে কি? নির্বাচনোত্তর প্রতিহিংসার রাজনীতি দেশের বিভিন্ন জায়গায় আঠারো ব্যক্তির মৃত্যুসহ গৃহদাহ, খুন, জখম, দোকানপাট, জমি দখল, বাসস্ট্যান্ড, মার্কেটে হুকুমজারি ইত্যাদি নানা আকারে বিস্তার লাভ করেছে। উপজেলা নির্বাচনে কোন কোন জায়গায় এসব সহিংসতার তীব্রতা বেড়েছে। তবু বিরোধী জোটসহ রাজনৈতিক নেতারা এবং দেশবাসী আশা ধরে রেখেছে, এই সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে আসবে। কারণ, প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার দৃঢ়ভাবে দলীয় নেতাকর্মীসহ সব তরফের জবরদস্তি ও জঙ্গিপনাকে দমন করার ঘোষণা দিয়েছেন, প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। কোন কোন সহিংসতার ঘটনাকে বিরোধী দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল বলে চালিয়ে দেয়ার যে সাফাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একবার গেয়েছিলেন, সেজন্য ভর্ৎসনা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরাও মুখ বন্ধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু সব মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর মুখ সেভাবে বন্ধ হয়নি। দায় এড়াতে দোষারোপের রাজনীতির যে বহু দিনের অভ্যাস, সেটা অনেকেই এখনো ছাড়তে পারছেন না। তাদের কথায় বা আকার-ইঙ্গিতে প্রশ্রয় বোধ করে চলেছে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের জঙ্গি নেতাকর্মীরা। কোন কোন পত্রিকার রিপোর্টে এ কথাও এসেছে যে, আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা যারা মন্ত্রিত্ব না পেয়ে ুব্ধ তারাও পেছন থেকে উসকাচ্ছেন ওই ক্যাম্পাস-ছাত্রাবাস দখলের রাজনৈতিক সহিংসতাকে। তাতে দলের মধ্যে তাদের উপদলীয় শক্তি বৃদ্ধি পাবে বলে তাদের নেত্রীকে অমান্য করে এই গোপন তৎপরতা। ওই সব রিপোর্ট ঠিক বা বেঠিক যা হোক না কেন, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে হিংসাতœক রাজনীতি ওছাত্রাবাস দস্যুতা উচ্চ শিা প্রতিষ্ঠানগুলোকে পেয়ে বসেছে। ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো ছাত্রদল ও শিবিরশূন্য। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্ত্র হাতে মুখোমুখি ছাত্রলীগের প্রতিদ্বন্দ্বী দুই গ্র“প। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিপত্য বিস্তারে মরিয়া ছাত্রলীগের একাধিক গ্র“পের নেতাকর্মীরা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ আলটিমেটাম দিয়ে চালাচ্ছে ভিসি অপসারণ আন্দোলন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল-শিবির হল থেকে বিতাড়িত। রাজশাহী ও কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংগঠনগুলোতে বিরাজ করছে চাপা উত্তেজনা। একই অবস্থা দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজগুলোতেও। সহিংস ঘটনার বেশির ভাগই মতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল। কিছু ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের প্রতিপ ছাত্রদল ও শিবিরের সাথে চলছে চোরাগোপ্তা সংঘর্ষ। ঘটনা সামাল দিতে না পেরে কোন কোন প্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিত প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর ও প্রভোস্টারাও পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। কোন কোনটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছে কর্তৃপ। বন্ধ হওয়ার আশঙ্কার মধ্যে রয়েছে আরো কয়েকটি শিা প্রতিষ্ঠান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মতার পালাবদলের সাথে সাথেই রাজনৈতিক প্রতিপশূন্য বিভিন্ন হলে ছাত্রলীগের প্রতিপ হয়ে ওঠে ছাত্রলীগেরই নেতাকর্মীরা। ফলে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে শুরু হয় সংঘর্ষ। শুধু জিয়াউর রহমান হলেই এরকম সহিংস ঘটনা ঘটেছে একাধিকবার। এ ঘটনায় কয়েক কর্মীকে গ্রেফতারও করা হয়। ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও শিবির নেতাকর্মীদের মারধর করা হয় কয়েক দফায়। সর্বশেষ ১৭ জানুয়ারি ছাত্রদলের জসীমউদ্দীন হলের যুগ্ম সম্পাদক আবু সাইদকে বেদম মারধর করে ছাত্রলীগ কর্মীরা। হলে সহাবস্থান নিশ্চিত করার দাবিতে ছাত্রদল বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। ভিসি প্রফেসর এস এম এ ফায়েজের বিরুদ্ধে ছাত্রদল নেতারা পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারার জন্য পদত্যাগের স্লোগান দিলে ওই দিনই তিনি পদত্যাগপত্র চ্যান্সেলরের কাছে পাঠিয়ে দেন। এক জরুরি বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করেন সব অনুষদের ডিনরা। নবনিযুক্ত ভিসি প্রফেসর আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন, ট্রানজিশনাল পিরিয়ডে এমন (হিংসাতœক) অবস্থা হয়েই থাকে। দলমত নির্বিশেষে ছাত্র-সহাবস্থানের ব্যবস্থা নেয়ারও অঙ্গীকার করেছেন তিনি। তবে সেটা সময়সাপে।জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৭ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গ্র“প ও সাধারণ সম্পাকদক গ্র“পের সংঘর্ষে রণেেত্র রূপ নেয় গোটা ক্যাম্পাস। উভয় গ্র“পের সশস্ত্র হামলায় কমপে ২৫ নেতাকর্মী আহত হয়। হামলায় একটি জাতীয় দৈনিকের সাংবাদিকও আহত হন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপ ক্যাম্পাসের এই ঘটনার বিষয়ে মৌখিকভাবে সংশ্লিষ্ট ছাত্রলীগ নেতাদের সতর্ক করেছে। চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতৃত্বের তরফেও। গত ১৬ জানুয়ারি জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে হল দখল ও ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে ক্যাম্পাস রণেেত্র পরিণত হয়। এ সময় উভয় গ্র“পের সংঘর্ষে কমপে ৪০ নেতাকর্মী আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে বাধ্য হয় পুলিশ। আহতদের পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন হাসপাতাল ও কিনিকে ভর্তি করা হযেছৈ। বাকিদের বিভিন্ন হলে চিকিৎসা চলছে। হলে চিকিৎসাধীন নেতাকর্মীদের চিকিৎসায় প্রতিপ গ্র“পের কর্মীরা বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে আহত কর্মীরা। এ ছাড়া মওলানা ভাসানী হল ও বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্ররা অবরুদ্ধ। এই সহিংস ঘটনার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র লীগের কার্যক্রম এক মাস স্থগিত করেছে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি। কিন্তু তাতে কাজ হচ্ছে না। প্রকাশ, ওই ক্যাম্পাসে দখলদারি ছাত্র রাজনীতির এমন প্রচণ্ড রূপধারণের নেপথ্য কারণ ১০ কোটি টাকার নির্মাণকাজের চাঁদাবাজি কমিশন। জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের জন্য প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ছাত্রাবাস হবে। এজন্য এ পর্যন্ত চারবার দরপত্র আহবান করতে হয়েছে। প্রথমবার ১০টি দরপত্র বিক্রি হলেও কোনটি জমা পড়েনি। পরের বার জমা পড়েছিল একটি। সেটিরও প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটের ৩৫ শতাংশ বেশি। তৃতীয় আর চতুর্থবারের উদ্যোগেও দরপত্র জমা পড়ে একটি করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতৃত্বের দুই ভাগ কয়েক দিন ধরে হল দখল করা ও দখলে রাখা নিয়ে যে মরপথ ‘যুদ্ধে’ লিপ্ত হয়েছে, চাঁদাবাজিই তার মূলে বলে সাধারণ শিার্থী এবং প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তার ধারণা। আপাতত নেতৃত্ব নিয়ে সৃষ্টি এই ‘যুদ্ধাবস্থার’ অন্যতম প্রধান কারণ ক্যাম্পাসে যাদের আধিপত্য থাকবে, ছাত্রাবাস নির্মাণের দরপত্র ও ছাত্রাবাস নির্মাণের প্রক্রিয়া তারাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। ঢাকা কলেজে ছাত্রাবাস দখলকে কেন্দ্র করে গত ১১ জানুয়ারি ত্রিমুখী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ছাত্রলীগ। এতে কমপে ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়। তুমুল সংঘর্ষে কিংকর্তব্যবিমূঢ় শিকরা কলেজের মসজিদের মাইকে বারবার ঘোষণা দিয়েও শান্ত করতে পারেন নি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা বর্তমানে হলে নেই। ক্যাম্পাসে বিচ্ছিন্নভাগে ছাত্রদল ও শিবির নেতাকর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। সহাবস্থানের জন্য রাজশাহীর মেয়র, এমপি. পুলিশ কমিশনার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপ যে নীতিমালা প্রণয়ন করেছে তা প্রত্যাখ্যান করেছে ছাত্রলীগ নেতৃত্বে ‘প্রগতিশীল ছাত্রসমাজ’। নির্বাচনের পরপরই ৩ জানুয়ারি রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় রুয়েটে ছাত্রদল কর্মীদের পিটিয়ে বের করে দেয় ছাত্রলীগ। এ সময় কমপে ২০ কর্মী আহত হয়। গত ৯ জানুয়ারি ছাত্র শিবির কর্মীদের ওপর হামলা করে ‘প্রগতিশীল’ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাতে আরো ২০ জন আহত হয়। খুলনা মেডিক্যাল কলেজ ৯ জানুয়ারি রাতে ছাত্রলীগ-শিবির সংঘর্ষের পর অনির্দিষ্টকাল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। ১৪ জানুয়ারি ছাত্রদের সব সংগঠনকে নিয়ে কর্তৃপ জরুরি বৈঠক করে মুচলেকা নিয়ে কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৬ জানুয়ারি কলেজ খুলেছে। খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় কুয়েট বিশ্ববিদ্যালয় মর্যাদায় উন্নীত হওয়ার সময় থেকে এ পর্যন্ত সেখানে দলীয় ছাত্র রাজনীতি ছিল না বললেই চলে। কিন্তু ১৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শীর্ষ কর্মকর্তার উৎসাহে সেখানে বর্তমান সরকারের মন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ানকে হঠাৎ করেই বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবর্ধনা দেয় ছাত্রলীগ। ফলে ক্যাম্পাসে বিরোধ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়ে বলে প্রকাশ। ময়মনসিংহে মহাজোটের বিজয়ের পর থেকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্র দল ও শিবির সমর্থকদের বিতাড়ন করা হয়েছে। প্রতিপ সংগঠনের সমর্থক কেউ যাতে হলে না উঠতে পারে, তার জন্য ছাত্রলীগ সমর্থকরা নিয়মিত মহড়া দিয়ে যাচ্ছে। সিলেটে ভর্তি কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির দায়ে অভিযুক্ত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগ পন্থী এক শিকের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে। ভর্তি কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা ও ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগে ক্যাম্পাসে সাধারণ শিার্থীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। বরিশালে বি এল কলেজে ৫ জানুয়ারি ছাত্রলীগ ও শিবিরের সংঘর্ষে উভয় পরে পাঁচজন আহত হয়। মীমাংসার জন্য দুই সংগঠনের নেতাদের সাথে কলেজ কর্তৃপরে বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও এ পর্যন্ত সহাবস্থান প্রতিষ্ঠার লণ নেই। চোখ রাঙিয়েই দখলবাজির দাপট দেখাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। সেখানে চলছে ‘বিএনপি জামায়াতপন্থী’ হওয়ার দায়ে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে আন্দোলন। তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের গেটে। ৪৭ ঘন্টা পর ১৮ জানুয়ারি সকাল ১০ টাকায় সব তালা খুলে দিয়েছে পুলিশ। ওই দিনের শেষে অবরোধ কর্মসূচিও প্রত্যাহার করেছে ছাত্রলীগ নেতারা। সব শিাপ্রতিষ্ঠানে সব সংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রদত্ত নির্দেশ অনুযায়ী ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তলব পেয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা গেটের তালা খুলতে দিয়েছে বলে জানিয়েছে। আর ক্যাম্পাসে ঘটেই চলেছে নানা ধরনের আতঙ্কবাজি। ভিসি’র পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা আবারো দিয়েছে চবি ছাত্রলীগ ১৯ জানুয়ারি। তাদের আরো দাবি শিবির সমর্থক বলে কথিত একজন শিক ও ৩৭ জন কর্মচারীর চাকরির অনুমোদন না দেয় এবং ছয়টি ছাত্রাবাস ও ইজারা দেয়া কিছু কটেজ শিবিরমুক্ত করা। শিকতায় এবং প্রশাসনে এভাবে ছাত্রলীগের হস্তপে ও দৌরাতেœ্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিকরা বিব্রত। ছয় প্ল্যাটুন পুলিশ আর আর্মড পুলিশ নিয়োগ করে একরকম শান্তি রা হচ্ছে। আশ্চর্যের কথা হলো, ছাত্রলীগের দাবিরই প্রকারান্তরে প্রতিধ্বনি করলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। বললেন, ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটা হল দখল করে রেখেছে। কিন্তু উপাচার্য বা প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এই নিবন্ধের সূচনায় ওই জাতীয় দৈনিকের সম্পাদক ভাষ্যকর ওই পত্রিকার ১৯ জানুয়ারি ২০০৯ সংখ্যার (প্রায় দশ বছর বাদে) আবারো মন্তব্য প্রতিবেদনে লিখলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী, ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণের জন্য লিখেছেন ঃ ‘শান্তি-শৃঙ্খলা রায় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রচেষ্টা আছে। তবে ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রধানমন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রকাশ্য কোন উদ্যোগ বা তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। কিছু কিছু েেত্র, বিশেষ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের তৎপরতায় সরকারের কোন কোন মহলের সমর্থন আছে বলে মনে হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প থেকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেওয়ার কথা বলা হলেও এখন পর্যন্ত পরিস্থিতির তেমন কোন উন্নতি দেখা যাচ্ছে না।’ আরো লিখেছেন ঃ ‘২০০১ সালের ১৩ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ ও জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের দখলমুক্ত করতে ছাত্রদলের ক্যাডাররা লাঠিসোটা দিয়ে ভাংচুরের পাশাপাশি গোলাগুলি করেছিল। পিস্তল ও কাটারাইফেল নিয়ে ছাত্রদলের ক্যাডারদের হল দখলের বেশ কিছু ছবি সে সময় ঢাকার বিভিন্ন দৈনিক ছাপাও হয়েছিল। জগন্নাথ হল দখল শেষে তৎকালীন ছাত্রদলের সভাপতি ও সাংসদ নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টু সেখানে হাজির হয়েছিলেন। তিনি ছাত্রদলের ক্যাডারদের সাফল্যে তাদের ধন্যবাদ জানান, উৎসাহ জোগান। তারপর তার ক্যাডার বাহিনী পিস্তল আর বন্দুক নিয়ে জহুরুল হক হলের দখল নেয়।.... প্রতিবেদন প্রকাশের দিনই সন্ধ্যায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপি’র জ্যেষ্ঠ যুগ্ন মহাসচিব তারেক রহমান পরপর আমাকে ফোন করে বলেছিলেন, ‘আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি। দেখবেন ছাত্রদলকে নিয়ন্ত্রণ করব।’ ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর ছাত্রদলের হল দখলের পরের দিন আইনশৃঙ্খলা রা বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির তৃতীয় বৈঠকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া যেকোন ধরনের জবর দখলের জন্য দায়ী এবং অবৈধ অস্ত্রধারী যেই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দনে। তারপর ১৭ নভেম্বর ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। আর নির্বাচনে বিজয়ের এক মাস ১০ দিন পর ছাত্রদলের সভাপতি এবং সংসদ সদস্য নাসিরউদ্দিন পিন্টুকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু (দুর্ভাগ্যের বিষয়) নয় মাস পর ছাত্রদলকে আবার সক্রিয় করা হয় এবং চিহ্নিত সন্ত্রাসী, অছাত্র ও ঠিকাদারসহ ছাত্রদলের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়। তেমন দুর্ভাগ্যের যেন পুনরাবর্তন না ঘটে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করে ওই ভাষ্যকার সম্পাদক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রকারন্তরে স্মরণ করিয়ে দেন, লোকচে ছাত্রলীগের দুরাচারের দায় সরাসরি শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ওপর বর্তাবে। কারণ ব্যক্তিগত আনুগত্যের বিদূষকোচিত অভিব্যক্তিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, ‘দীর্ঘ প্রায় দুই যুগ ধরে জাতির গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা, অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা এবং শান্তির সংগ্রামে বীর সেনানী দেশরতœ জননেত্রী শেখ হাসিনার সাংগঠনিক নেতৃত্ব আমাদের পথচলার কঠিণ সংগ্রামে যেন স্নেহের শীতল বারি।’১৯ জানুয়ারি সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকে মন্ত্রিসভার নিয়মিত সাপ্তাহিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক সূত্রে প্রকাশ, মন্ত্রিসভায় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা হয়। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ এ ব্যাপারে গৃহীত ব্যবস্থা বৈঠকে উপস্থাপন করেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প থেকে বলা হয়, শিাপ্রতিষ্ঠানের সাম্প্রতিক অস্থিরতার সময় দুয়েক জায়গায় কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তা দায়িত্বে শৈথিল্য দেখিয়েছেন। তবে তদন্তে কোন কর্মকর্তার দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বৈঠকে মন্ত্রীরা বলেন, মতাসীন দলের সহযোগী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে দল ও সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। শিাঙ্গনে সাম্প্রতিক অস্থিরতায় স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়ের নেতা ব্যবস্থায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের কথা কম বলে কাজ দিয়ে দতা দেখানোর পরামর্শ দেন। কিন্তু ‘শান্তির সংগ্রামে বীর সেনানি দেশরতœ জননেত্রী’ শেখ হাসিনা স্বয়ং হস্তপে না করলে তার একান্ত অনুগত ছাত্রলীগ কর্মীরা আর কারো কথা শুনবে কি?
- লেখক ঃ বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিষ্ট।

স্পেন বি. এন. পির প্রতিবাদ সভা স্টার্প রিপোটার ঃ-
আনোয়ার হোসেন বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের, খাদ্য মন্ত্রী ও সংসদ জনাব আব্দুর রাজ্জাক স্পেন সরকারের আমন্ত্রনে স্পেন এলে স্পেন চারদলীয় জোটের উদ্যোগে স্থানীয় একটি হোটেলে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। স্পেন বি. এন. পির প্রতিনিধি এম. এ. জলিলের সভাপতিত্বে। মোসারফ হোসেন রাসেলের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, মোঃ শুকুর আলী, বোরহান উদ্দিন, ফয়সাল হোসেন, মাসুদ রানা, খলিলুর রহমান, আঃ মতিন, আমির খরসু, শাহাজান মোল্লা, জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ। সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সকল অবৈধ কাজের বৈধতা দিŸে বলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিলে। ফখর উদ্দিন, প্রশাসনকে ব্যবহার করে ডিজিটাল কারচুপির মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে মতায় আনেন। যাহা বাংলাদেশের আপামার জনগণ বুঝতে পেরেছেন। ২৯ ডিসেম্বর অনেকে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখেন তার ভোট হয়ে গেছে। যেখানে ৪২/৪৩ শতাংশ ভোটার ভোট প্রয়োগ করলে বি. এন. পি সরকার গঠন করেছিল বিগত সংসদ নির্বাচনে। অথচ নজিরবিহীন কারচুপি। ৯১ শতাংশ ভোট কাষ্ট করে অনেক কেন্দ্রে ভোটারের চেয়ে ভোট বেশী কাষ্ট হয়েছে। ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে, ডিজিটাল কারচুপি হয়েছে তাহা প্রমাণ করেছে উপজেলা নির্বাচনে এনালগ কারচুপির মাধ্যমে। যেখানে স্বয়ং নির্বাচন কমিশনের প্রধান ড. এটি এম শামসুল হুদা এবং কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) এম সাখাওয়াত হোসেন স্বীকার করেছেন। নির্বাচনের পর সারা বাংলাদেশে চারদলীয় জোটের নেতা কর্মীদের উপর হামলা হয়েছে অনেকে হত্যা, খুন হয়েছেন। অনেকের বাড়ী-ঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। আওয়ামী লীগ মতা যাওয়ার পর ১৯৭৩-৭৫ সালের ন্যায় লুটপাট শুরু হয়েছে। কমলাপুর রেলষ্টেশনের ৫৬টি করে তালা ভেঙ্গে ডাকাতি হলে অথচ কোন সন্ধান করতে পারলো না সরকার। জাতীয় মসজিদের (বায়তুল মোকারম) খতিব নিয়োগকে কেন্দ্র করে, যে অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটালো। সাধারণ ধর্মপ্রাণ মোসল্লীদের পিটিয়ে মসজিদ থেকে বাহির করে দেওয়া হলো। এ সকল দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছে। আগামী দিনে হাসিনা সরকার এ দেশের মানুষকে শান্তিতে বসবাস করতে দিবে না। তাই তাকে পদত্যাগ করা উচিত। একটি সাজানো চকের নির্বাচনে জিতা খাদ্য মন্ত্রী স্পেনে এসেছেন। তাহা স্পেনের চারদলীয় ঐক্য জোট মেনে নিতে পারে না। তারা ফখরুদ্দীনের সাজানো ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনকে এবং ২২ জানুয়ারী ২০০৯-এর নির্বাচনকে ধিক্কার জানান। অগণতান্ত্রিক সরকারের খাদ্য মন্ত্রীকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন। সভাপতি তার বক্তব্যে আরো বলেন যে, এত কারচুপি করার পরও বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দলের চেয়ারপ্যারর্সন দেশনেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, দেশের অসহায় মানুষের কথা চিন্তা করে কোন রাজনৈতিক ইসু, যেমন হরতাল, অবরোধের ঘোষণা না দিয়ে তিনি শুধু বলেছেন, বড় ধরনের কারচুপির মাধ্যমে চারদলীয় জোটকে হারানো হয়েছে। আওয়ামী লীগ যে প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন মতা এলে ১০ টাকায় চাউল খাবাবেন, হিংসার রাজনীতি পরিহার করে গণতন্ত্রপূর্ণ প্রতিষ্ঠা করবেন, আমরা তা দেখতে চাই। অথচ এই ধরনের সাজানোচকের ডিজিটাল কারচুপি করে আওয়ামী লীগকে হারিয়ে বি. এন. পিকে মতায় বসালে শেখ হাসিনা হরতাল, অবরোধ, ভাংচুর, জ্বালাও পোড়াও এবং লগিবৈঠা দিয়ে মানুষ পিঠিয়ে হত্যা করে বাংলাদেশকে অকার্যকর করে ফেলতো। এখানেই পার্থক্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং সভানেত্রী শেখ হাসিনা মধ্যে।


বাংলাদেশ এসোসিয়েশন কেমন আছে ?
স্পেন প্রবাসী বাংলাদেশীয়দের মিলন কেন্দ্র বাংলাদেশ এসোসিয়েশন। স্পেন-এ প্রথম দিকে আগত কিছু বাংলাদেশীয়রা, নিজেদের সাংস্কৃতিকে বিকাশের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠা করেন অরাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ এসোসিয়েশন। যারা শ্রম, অর্থ ও মেধা দিয়ে প্রতিষ্ঠা করলেন এই এসোসিয়েশন তাদের ধন্যবাদ জানানো উচিত। তারা চিন্তা করেছিলেন, প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলার একটি স্থানের প্রয়োজন, পাশাপাশী বাংলাদেশের জাতীয় দিনগুলিতে, দেশের পতাকাকে সম্মান করা ইত্যাদি। একটা কথা আছে। শেষ ভালো যার সব ভালো তার। যাদের প্রচেষ্টা এসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠিত হলো, তাদের মাঝে কিছু অসৎ লোক রাজনৈতিক ও আঞ্চলিকতার প্রভাব খাটাতে গিয়ে এসোসিয়েশনে বর্তমানে তালা ঝুলানোর অবস্থা সৃষ্টি করেছেন। বিশেষ করে বিগত এসোসিয়শনের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটলে এটার জন্য দায়ি বাংলাদেশী কিছু অর্থশালী এরা টাকার বিনিময়ে সম্মান কিনতে চায় চেয়ারে বসাতে চায়, টিভি চ্যানেলে ছবি দেখাতে চায়। এরা অন্যায়কারীকে অন্যায় করার সাহস যোগায়। এরা যোগ্য লোকগুলিকে সরিয়ে অর্থের বিনিময়ে নিজেদের যোগ্যবলে প্রমাণ করতে চায়। একটা প্রবাদ আছে, অন্যায়কারী এবং অন্যায়কে যে প্রশ্রয় দেয় তথা অন্যায় সহ্য করে, উভয়েই সমান অপরাধী। নিজে অন্যায় না করলেই যে তার কর্তব্য ফুরিয়ে যায় এমনটি নয়। বরং অন্যায়কে প্রতিহত করাই সকলের দায়িত্ব ও কর্তব্য। সমাজকে যারা উৎপীড়ন করে ব্যক্তির অধিকারকে যারা হরণ করে মানুষের বহু অভিজ্ঞতা এবং প্রযতেœ রচিত আইন ও শৃঙ্খলাকে যারা বিঘিœত করে তারা নিঃসন্দেহে অন্যায়কারী। কারো অপরাধ মা করার মধ্যে যে উদারতা আছে তা মনুষ্যত্বেরই পরিচয়। কিন্তু মার মাত্রা থাকা চাই। অন্যায়কারী যদি মতা পেয়ে বারবার অন্যায় করতে থাকে তবে সে মার যোগ্য নয়। এতে তার অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে। এই ধরনের অন্যায়কারীর অন্যায় মা করা কোন মহৎ ব্যক্তির কাজ হতে পারে না। বরং সেও অন্যায়কারীর মত সমান অপরাধী হবে। বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের কেন আজ এই অবস্থার সৃষ্টি হলো তা আজ পর্যন্ত শুনানি হয় নাই। যদিও সাধারণ জনগণ জানেন, বুঝেন কিন্তু দায়িত্বশীলদের উচিত ছিল একটা শুনবার ব্যবস্থা করা। তাহা হলে অসৎ ও অন্যায়কারীরা চিহ্নিত হয়ে যেত। বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের ১৯৯৯-২০০১ সালের কমিটি, ২০০১-২০০৩ সালের কমিটি ২০০৩-২০০৫ সালের কমিটি ভালো মন্দ যাই করেছেন তাহা বিচার করার কথা না হলেও অন্তত ভাড়াটা পরিশোধ করে এসোসিয়েশনকে দাড়িয়ে রেখেছেন। কিন্তু ২০০৬-২০০৮ সালের কমিটি যে প্রতিশ্র“তি দিয়েছিলেন এসোসিয়েশনের স্যোসাল সিকিউরিটির পাওনাকৃত অর্থ তারা দিয়ে দিবেন তাদের সভাপতি ও সেক্রেটারী করা হলে, সেই অর্থ দেওয়াতে হলোই না বর্তমানে এসোসিয়েশনের মাসের ভাড়া বকেয়া রেখে দেন তারা। অথচ নির্বাচন কমিশন থেকে বুঝে পাওয়া অর্থ কি করলেন তারা? তারা মতায় গিয়ে আজ পর্যন্ত একটি সাধারণ সভার আয়োজন করতে পারেন নাই। যারা সেই দিন আঞ্চলিকতার এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে, একটি স্থগিত নির্বাচনকে পূণরায় নিয়ম ভঙ্গ করে অগণতান্ত্রিকভাবে এই কমিটিকে দায়িত্বে আনলেন তারা আজ কোথায়? সেই সকল অর্থশালীরা এবং আঞ্চলিক নেতারা এসোসিয়োশনের বকেয়া পরিশোধ করে দিবে এইটা সাধারণ সদস্যদের কথা। অযোগ্য এবং অসৎ লোক দিয়ে যেমন একটি রাষ্ট্র চলতে পারে না, তেমনি কোন সমাজও সংগঠন চলতে পারে না, তেমনি কোন সমাজ ও সংগঠন চলতে পারে না। ষ্টাইলিং এর একটি প্রবাদ, একজন ডাক্তার ভুলবশতঃ একজন রোগীকে ইন্জেকশন ফুস করলে একজন রুগী মারা যাবে কিন্তু রাষ্ট্রের সমাজের বা সংগঠণের নেতা ভুল করলে দেশ, জাতী, সমাজ ও সংগঠনধ্বংস হয়ে যায়। তাই বাংলাদেশ এসোসিয়েশনকে দাড়িয়ে রাখতে আমাদের সমাজের প্রতিটি সদস্যকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রয়োজন সৎ এবং যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি জবাবদিহিতা কমিটি গঠণ করতে হবে। কার্যকরী কমিটি চলে যাওয়ার আগে জবাবদিহিতা কমিটির নিকট সকল দেনা পাওনা বুঝিয়ে দিয়ে বিদায় নিবেন জবাবদিহিতা কমিটি। আঞ্চলিক এবং রাজনৈতিক মানষিকতার উর্ধ্বে উঠে একটি যোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠণ করবেন। বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের গঠণতন্ত্রে নতুন কিছু অনুচ্ছেদ সংযোজন করতে হবে এবং কিছু অনুচ্ছেদে সংযোজন, পরিবর্তন, পরিবর্ধন করতে হবে। তাহলে বিগত দিনের সমস্যাগুলির সমাধানের জন্য সংবিধান থেকে আইনি ব্যাখ্যাসহ সমাধান খুঁজে পাওয়া যাবে। আমাদের সকলের সৎ প্রচেষ্টা থাকলে অন্যায়কারীদের চিহ্নিত করা যাবে এবং আমাদের দেয়া অর্থের হিসাব দিয়ে যেতে হবে তাদের। আমরা শান্তি ও শৃঙ্খলা চাই। আমরা বিশৃঙ্খল জাতি নয়। আমাদের প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধতা। আমরা চাই আমাদের এসোসিয়েশন “একটি ছাতা” টিকে থাকুক।


স্পেন বি. এন. পি’র কর্মীদের বিােভ সমাবেশপ্রেস বিজ্ঞপ্তি ঃ গত কয়েকদিন আগে, বাংলাদেশ থেকে বর্তমান বিতর্কিত সরকারের খাদ্য ও দূর্যোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী জনাব আঃ রাজ্জাক স্পেন এলে বাংলাদেশ এসোসিয়শনের প্যেডে এক প্রচার পত্র বিলি করা হয়। কমিটির উদ্যোগে মন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। যেহেতু তিনি আওয়ামী লীগের মন্ত্রী তাই স্পেন আওয়ামী লীগের প থেকে মন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় কয়েকদিন আগে। স্পেন বি. এন. পি সদস্যদের ােভ, ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচন, ফখর উদ্দিন কারচুপির মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে জয় করিয়ে মতায় বসিয়ে দেন। তাই উক্ত মন্ত্রী বাংলাদেশের সকল জনগণের মন্ত্রীর নয়। বর্তমান আওয়ামী লীগ একটি বিতর্কিত সরকার। ২৯ ডিসেম্বরে নির্বাচনকে যে সকল দেশী বিদেশী পর্যবেক সুষ্ট ও নিরপে বলেছেন, অথচ ২২ জানুয়ারী ’০৯ উপজেলা নির্বাচনের দৃশ্য দেখে ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচন কারচুপি হয়েছে বলে বর্তমানে মন্তব্য করেছেন। বাংলাদেশ এসোসিয়েশন একটি অরাজনৈতিক সংগঠণ। কিভাবে এসোসিয়শনের প্যেডে বিতর্কিত সরকারের মন্ত্রীর সংবর্ধণা অনুষ্ঠানের প্রচার করা হলো। তাই স্পেন বি.এন.পির সদস্য (তারা এসোসিয়শনের ও সদস্য)-দের প্রশ্ন? হ্যাঁ কমিউনিটির কিছু লোক মন্ত্রীকে সংবর্ধনা দিবে এটা তাদের অধিকার, তারা প্রচারপত্র অন্যভাবে করলে এসোসিয়েশন রাজনীতির উর্ধ্বে থাকত। পূর্বের অভিজ্ঞতায় কথা বলতে হয়। ২০০৪ সালে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং প্রবাসী কল্যাণ ও সাবেক কর্মসংস্থান মন্ত্রী মেজর অবঃ কামরুল ইসলামকে স্পেনে শ্রমিক আমদানির সুযোগ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে জানানো হলে কুয়েতে অবস্থানরত মন্ত্রণালয়ের চেয়ারম্যান মোঃ নাজির হোসেন এম.পি (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) এবং সদস্য এম.এ. জিন্না এম.পি স্পেন সফর করেন। তখন তাদেরকে স্পেন বি. এন.পি’র প থেকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। ঐ বছরেই পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ণ পরিষদ-এর চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা), আঃ ওয়াদুদ ভূইয়া স্পেন এলে বি.এন.পি’র প থেকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। উভয়কে কমিউনিটির উদ্দোগে সংবর্ধনার কথা বলা হলে তখনকার বাংলাদেশ এসোসিয়শনের কার্যকরী কমিটি সরাসরি প্রত্যাখান করেন এবং বি.এন.পি সরকারের সমালোচনা করেন। ২০০৬ সালে সাবেক মন্ত্রী ও ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকা স্পেন এলে স্পেন বি.এন.পির উদ্যোগে সংবর্ধনা দেয়া হয়। এসোসিয়শনের কোন কমিটি ছিল না। একটি আহবায়ক কমিটি (আমি সেই কমিটির সদস্য ছিলাম) এসোসিয়েশন পরিচালনা করেন। ১৬ সদস্যের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, মেয়রকে কিভাবে সংবর্ধনা দেওয়া যায়। অনেক তর্ক বিতর্কের পর সিদ্ধান্ত হয় শুধু আহবায়ক কমিটির সদস্যরাই মেয়রকে সংবর্ধনা দিবে। এসোসিয়েশনকে রাজনিতীর উর্ধ্বে রাখতে হবে। তাই প্রচারকে সকল সদস্যদের জানিয়ে করা যাবে না। তাহলে স্পেন আওয়ামী লীগের সদস্যরা (তারাও এসোসিয়শনের সদস্য) েেপ যাবে এবং এসোসিয়শনের গঠণতন্ত্র অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে ভাবমুর্তি ুন্ন হবে। সাবেক রাষ্ট্রদূত আনোয়ার উল-আলম আমাদের প্রস্তাবকে সমর্থন করেন এবং মেয়রকে নিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তাই স্পেন বি.এন.পির সদস্যদের ােভ বাংলাদেশ এসোসিয়েশন কি রাজনৈতিক সংগঠন? পাঠকদের উদ্দেশ্যে বলছি আমরা যুক্তি তুলে ধরলাম কাউকে হেয় করার জন্য নয়। এদিকে স্পেন বি.এন.পির কিছু নেতা কর্মী বিতর্কিত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মন্ত্রীকে সম্মান জানিয়ে বক্তব্যও দিয়েছেন। তারা কি সত্যিই বি.এন.পির সদস্য? না কি সুবিদাবাদী দালাল? এদেরকে স্পেন বি.এন.পি থেকে বহিষ্কার করার জন্য চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আবেদন পাঠানো হয়েছে।


বাংলাদেশ মসজিদ কমিটি মাদ্রিদবর্তমান মসজিদ কমিটির কার্যক্রম অত্যন্ত প্রশংসনীয়। অত্যন্ত দতা ও বিচণতার সহিত কার্যক্রম পরিচালনা করছেন উক্ত কমিটি। মাহে রমজান মাসে বাংলাদেশীয় আমেজে খতমে তারাবীর নামাজ ও অন্যান্য আয়োজন করে উক্ত কমিটি। বর্তমানে মসজিদের দায়িত্বে আছেন- মাওলানা লোকমান হোসেন, হাফেজ জহির উদ্দীন এবং খাদেম হিসেবে আছে শুক্কুর আলী। বিগত কয়েক বৎসর যাবত মাওলানা লোকমান হোসেন ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন এবং প্রতি শুক্রবারের খোৎবার বয়ান এবং রবিবারে তাফসীরে ধর্মীয় আলোচনা অত্যন্ত যুগোপযোগীভাবে পেশ করেন। বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের মুসলমানদের মন-মানষিকতাকে আকৃষ্ট করেছে নতুন একজন হাফেজ (মোঃ জহির উদ্দীন), যার কুর’আন তেলাওয়াত ও আযানের ধ্বনি অত্যন্ত শ্র“তিমধুর। যিনি বর্তমানে মোয়াজ্জেম-এর দায়িত্বের সাথে সাথে প্রধান ইমামের অনুপস্থিতে নামাজ পড়ানো এবং মসজিদের অন্যান্য দায়িত্বও পালন করছেন।মসজিদ কমিটির আয়োজনে মিনি স্কুল চালু করা হচ্ছে। এখানে আমাদের প্রজন্মকে ধর্মীয় এবং বাংলা শিার পাশাপাশি ইংরেজি শিা কোর্চ-এর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাছাড়া প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামায়েতের সহিত পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতি রবিবার ধর্মীয় আলোচনাসহ বয়োস্কদের জন্য কোরআন শিার আয়োজন রয়েছে। প্রতি মাসে বড় অংকের অর্থ ব্যয়ে এই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করতে হয়। তাই সকলের উচিত আয়-রোজগার থেকে সামান্য হলেও মসজিদ পরিচালনায় অনুদান করা। লাভাপিয়াস যারা বসবাস করেন তারা খুবই ভাগ্যবান প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামায়েতে পড়তে পারেন। অন্য এলাকার মোসল্লিগণ সাপ্তাহে শুক্রবার বা বাজার করতে গেলে মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারেন। সত্যিই স্পেন প্রবাসী বাংলাদেশীয়রা খুবই ভাগ্যবান। একসাথে ১০০০ (এক হাজার) মোসল্লি একসাথে নামাজ আদায় করতে পারেন। আলহামদুল্লিাহ! আমরা আমাদের এই মসজিদের সার্বিক কল্যাণ কামনা করছি ॥