-----------------------------------------
প্রধানমন্ত্রীর স্বামী বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদের ইন্তেকাল, শোকাহত শেখ হাসিনার পাশে খালেদা জিয়া
বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া আর নেই। গতকাল শনিবার বিকেল ৪টা ২৫ মিনিটে তিনি ইন্তিকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। দীর্ঘদিন ধরে জটিল কিছু রোগের সাথে পাঞ্জা লড়ে গতকাল তিনি মৃত্যুর কাছে হার মানেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ জানান, আজ সকাল ১০টায় বায়তুল মোকাররম মসজিদে মরহুমের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তার জন্মস্খান রংপুরের পীরগঞ্জে দ্বিতীয় জানাজা শেষে মা-বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে। ড. ওয়াজেদ মিয়ার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। ড. ওয়াজেদের মৃত্যুতে সারাদেশে শোকের ছায়া নেমে আসে।
রাত ৯টায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া সুধা সদনে যান। এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পরিবারের সবাইকে সান্তবনা দেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। একই সাথে ড. ওয়াজেদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
ড. ওয়াজেদ মিয়ার কর্মময় জীবন
স্বনামধন্য পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া কাটিয়েছেন কর্মময় জীবন। প্রতিভাবান, মেধাবী এই বিজ্ঞানী প্রতিটি মুহূর্ত দেশের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। রাজনৈতিক সচেতনতা তার বর্ণাঢ্য জীবনে যুক্ত করেছে নতুন মাত্রা। ১৯৭১ সালে এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং এর আগে ও পরের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তার উপস্খিতি ছিল উল্লেখযোগ্য।
১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রংপুরের পীরগঞ্জ থানার ফতেহপুর গ্রামের বিখ্যাত মিয়াবাড়িতে জন্ম নেন ড. ওয়াজেদ মিয়া। ১৯৫৬ সালে রংপুর জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করার পর ১৯৫৮ সালে রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানে পড়ার সময় থেকেই ধীরে ধীরে যুক্ত হতে শুরু করেন রাজনীতির সাথে।
মেধাবী ছাত্র হিসেবে তার সুনাম ছিল। সে সময় বঙ্গবìধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব ও আদর্শের প্রতি অনুগত হয়ে পড়েন তিনি। ১৯৬১ সালে ফজলুল হক হলের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগ থেকে সহসভাপতি নির্বাচিত হন তিনি।
১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে এমএসসি পাস করার পরের বছর তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের লাহোরে আণবিক শক্তি কমিশনে চাকরিতে যোগ দেন।
১৯৬৭ সালে লন্ডনের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভের পর দেশে ফেরার পর একই বছর ১৭ নভেম্বর বঙ্গবìধু কন্যা শেখ হাসিনার সাথে বিয়ে হয় তার। সে সময় আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে ড. ওয়াজেদ সক্রিয় ছিলেন।
বঙ্গবìধু পরিবারের সদস্য হওয়ায় পরিবারটির আনন্দ-বেদনা ও দু:সময়ে ড. ওয়াজেদও এর অংশীদার ছিলেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবìধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও দুই সন্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দীর্ঘ সাড়ে ছয় বছর কাটাতে হয় তাকে। পরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার দায়িত্ব নেয়া এবং রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ায় তিনি সব সময় পাশে থেকে উৎসাহ জুগিয়ে এসেছেন।
সফল পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া আণবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে ১৯৯৯ সালে অবসর নেন। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে ড. ওয়াজেদ মিয়া ছিলেন ছোট। ভাই খালেক মিয়া ও বোন আনোয়ারা বেগম এখনো বেঁচে আছেন।
No comments:
Post a Comment